পাতা:খুন না চুরি? - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৮
দারোগার দপ্তর, ১৯ সংখ্যা।

 কোন প্রকার গৌরচন্দ্রিকা না করিয়া আমি একেবারে বলিয়া উঠিলাম, “রূপসীকে শীঘ্র আমার কাছে এনে দাও। এখানে রাখা ঠিক নয়, পুলিসের লোকে জান্‌তে পার্‌লে বাড়ী শুদ্ধ সকলকে এখনই বেঁধে নিয়ে যাবে। গুনেছি,তিনজন সন্ন্যাসী গ্রেপ্তার হয়েছে। যতদিন না বিচার হয়, ততদিন রূপসীকে সাবধানে রাখ্‌তে হবে।”

 আমার কথা শুনিয়া দাসী আমার মুখের দিকে চাহিয়া রহিল, কোন উত্তর করিল না। রূপসী আছে, কি না, সে বিষয়েও কোন কথা বলিল না। তাহার মুখের ভাব দেখিয়া বোধ হইল, রূপসী সেখানেই আছে, কিন্তু সে কথা সাহস করিয়া বলিতে পারিতেছে না। আমি নিশ্চয় জানিতাম না যে, রূপসী সেখানেই আছে, আন্দাজ করিরাছিলাম মাত্র। বিশেষতঃ যখন লাল সিংএর মুখে শুনিলাম যে, বিবাহের দিন প্রাতে শোভন সিংএর ভগ্নী তাহার বাড়ীতে প্রস্থান করিয়াছেন তখন তিনি যে রূপসীকে লইয়াই আসিয়াছিলেন, সে বিষয়ে কোন সন্দেহ ছিল না। সেই জন্যই আমি রূপসী সেখানে আছে কি না, জিজ্ঞাসা না করিয়া তাহাকে আমার নিকট আনিয়া দিবার কথা বলিলম।

 দাসীর মনোগত অভিপ্রায় বুঝিতে পারিলাম, সে যে আমার উপর অবিশ্বাস করিতেছে, তাহাও জানিতে পারিলাম। আমি যখন তাহার সম্পূর্ণ অপরিচিত, তখন তাহার এরূপ অবিশ্বাস জন্মিতে পারে বিবেচনা করিয়া, পূর্ব্ব হইতেই প্রস্তুত ছিলাম। তখনই পকেট হইতে একখানি পত্র বাহির করিয়া বলিলাম, “আমার কথায় বিশ্বাস না হয়, এই পত্র লও। শোভন সিং আমাকে এই পত্র দিয়াছেন। যাও, আর বিলম্ব করিও না। এখন আমাদের পদে পদে বিপদ ঘটিতে পারে।”