তিনি বলিলেন, “আমার নাম লালসিং, বাড়ী শিয়ালদহের নিকট।”
লালাসিংএর টাকার কথায় আমি কোন উত্তর করিলাম না দেখিয়া, তিনি পুনরায় ঐ কথা তুলিলেন। আমি বলিলাম, “টাকা আদায় করিবার ক্ষমতা আমাদের নাই। আমি কেবল খুনের তদ্বির করিতে পারিব।”
এই কথা শেষ হইতে না হইতে গাড়ীখানি একটী ক্ষুদ্র অট্টালিকার সম্মুখে থামিল। লালসিং অগ্রে গাড়ী হইতে অবতরণ করিলেন। আমিও নামিয়আ তাঁহার সঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করিলাম।
কিছুদূর অগ্রসর হইয়া আমরা একটী ক্ষুদ্র প্রাঙ্গণে উপস্থিত হইলাম। দেখিলাম, বিবাহোৎসব সম্পন্ন করিবার জন্য বাড়ীখানি বেশ সাজানো হইয়াছে। চারিদিকে বেলোয়ারি ঝাড় ঝুলিতেছে। একখানি চাঁদোয়া দ্বারা সমস্ত প্রাঙ্গণ আচ্ছাদিত রহিয়াছে। তাহারই নিম্নে একটা ঢালা বিছানা পাড়া ছিল। সেই বিছানার এক পার্শ্বে পাত্রের বসিবার স্থান নির্দ্দিষ্ট হইয়াছে। কিন্তু একজন লোককেও সেই শয্যার উপর দেখিতে পাইলাম না। অন্দর হইতে রমনীদিগের রোদনশব্দ আমার কর্ণগোচর হইতে লাগিল। কিন্ত শোভনসিংকে দেখিতে পাইলাম না।
কিছুক্ষণ প্রাঙ্গণে দাঁড়াইয়া আছি, এমন সময় লালসিং অঙ্গুলি নির্দ্দেশ দ্বারা একজনকে দেখাইয়া বলিলেন, “ইনিই শোভনসিং—আমার ভাবী শ্বশুর।”
শোভন সিং আমাকে দেখিয়া স্তম্ভিত হইলেন। কিন্তু তখনই আত্মসংবরণ করিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “আপনিই কি আমার কন্যার মৃতদেহ দেখিতে আসিয়াছেন?”