ডাঁটার উপর কলিকা বসাইয়া টান দিতে দিতে বলিল —“তারপর, এলি কবে? তোর হাল-চাল সব বল্।”
কারিয়া পিরেত যে ইতিহাস বলিল তার সারমর্ম্ম এই।—তার বাড়ী ছাপরা জিলা। দেশে এককালে তার জরু, গরু, জমি, জেরাৎ সবই ছিল। তার স্ত্রী মুংরী অত্যন্ত মুখরা ও বদ্মেজাজী, বনিবনাও কখনো হইত না। একদিন প্রতিবেশী ভজুয়ার ভগ্নীকে উপলক্ষ করিয়া স্বামি-স্ত্রীতে বিষম ঝগড়া হয়, এবং স্ত্রীর পিঠে এক ঘা লাঠি কশাইয়া স্বামী দেশ ছাড়িয়া কলিকাতায় চলিয়া আসে। সে আজ ত্রিশ বৎসরের কথা। কিছুদিন পরে সংবাদ আসে মুংরী বসন্ত রোগে মরিয়াছে। স্বামী আর দেশে ফিরিল না, বিবাহও করিল না। নানা স্থানে চাকরী করিয়া অবশেষে চাঁপদানীর মিলে কুলীর কাজে ভর্ত্তি হয় এবং কয়েক বৎসরের মধ্যে সর্দ্দারের পদ পায়। কিছুদিন পূর্বের একটি লোহার কড়ি ‘হাফিজ’ অর্থাৎ কপিকলে উত্তোলন করিবার সময় তার মাথায় চোট লাগে। তারপর একমাস হাঁসপাতালে শয্যাশায়ী হইয়া থাকে। সম্প্রতি পঞ্চত্ব প্রাপ্ত হইয়া প্রেতরূপে এই তালগাছে বিরাজ করিতেছে।
শিবু একটা লম্বা টান মারিয়া কলিকাটি কারিয়া
১৩৬