পাতা:গল্পকল্প - পরশুরাম.pdf/১০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গল্পকল্প

 ব্রহ্মা গড ও আল্লা—এ’দের মেজাজ একরকম নয়। ঠাট্টা তামাশায় কোনও হিন্দু দেবতা চটেন না। ব্রহ্মার তো কথাই নেই, তিনি সম্পর্কে´ সকলেরই ঠাকুরদা। গড় অত্যন্ত গম্ভীর, তবে সম্প্রতি তাঁর কিঞ্চিৎ রসবোধ হয়েছে, তাঁকে নিয়ে একটু আধটু পরিহাস করা চলে। কিন্তু আল্লা শ‍ুধু, দৃষ্টির অতীত বাক্যের অতীত নন, পরিহাসেরও অতীত। পাকিস্তানী শাসনতন্ত্রের মুখবন্ধে যে আল্লার আধিপত্য ঘোষণা করা হয়েছে তা মোটেই তামাশা নয়।


কালিদাস লিখেছেন, মহাদেবের তপস্যার সময় নন্দীর শাসনে গাছপালা নিস্পন্দ হ’ল, ভোমরা-মৌমাছি চুপ ক’রে রইল, পাখি বোবা হ’ল, হরিণের ছুটোছুটি থেমে গেল, —সমস্ত কানন যেন ছবিতে আঁকা। তিন বিধাতার সমাগমে সুমের‍ু পর্বতেরও সেই অবস্থা হ’ল; কিন্তু এ’রা ধ্যানস্থ না হয়ে তর্ক আরম্ভ করলেন দেখে স্থাবর জঙ্গম আশ্বাস পেয়ে ক্রমশ প্রকৃতিস্থ হ’ল।

 ব্রহ্মাকে দেখেই জিহোভার‍ূপী গড় ভ্রুকুটি ক’রে বললেন, তুমি কি করতে এসেছ? তোমাকে তো আজকাল কেউ মানে না, শব্দ বিয়ের নিমন্ত্রণপত্রে তোমার ছবি ছাপা হয়। কৃষ্ণ শিব কালী বা রামচন্দ্র এলেও বা কথা ছিল।

 ব্রহ্মা বললেন, তাঁরা আমাকেই প্রতিনিধি ক’রে পাঠিয়েছেন।

৯২