সকলেই শৃঙ্গীকে সম্মান করে। যে লোক পরিণাম না ভেবে ক্রোধের বশে শত্রুকে আঘাত করে, সে হঠকারিতার ফলে নিজে মরতে পারে, তার আত্মীয়রাও মরতে পারে, কিন্তু তার স্বজাতির খ্যাতি ও প্রতাপ বেড়ে যায়। হৃষীকেশ, ক্রোধ বিধিদত্ত মনোবৃত্তি, নামে রিপু হলেও মিত্র, তার নিন্দা ক’রো না। ক্রোধের প্রভাবে আমি কি দারুণ কর্ম করব তা দেখতে পাবে। ধৃতরাষ্ট্রকে নির্বংশ করব, দুঃশাসনের রক্তপান করব, দূর্যোধনের ঊরু, চূর্ণ করব। আমার কীর্তি হবে কি অকীর্তি হবে তা গ্রাহ্য করি না; কিন্তু লোকে চিরকাল বলবে, হাঁ, ভীম একটা পুরুষ ছিল বটে, অত্যাচার সইত না, দুরাত্মাদের শাস্তি দিতে জানত।
কৃষ্ণ। বৃকোদর, আপনার মনস্কাম পূর্ণ হবে। আপনি যা বললেন তাও তত্ত্বকথা। কিন্তু কোনও বিধানই সর্বত্র খাটে না। অত্যাচারিত হলে যে রাগ করে না, প্রতিকারও করে না, সে অক্রোধী কিন্তু কাপুরুষ, অমানুষ, জীবনধারণের অযোগ্য। যে ক্রোধে জ্ঞানশূন্য হয়ে পাপ ক’রে ফেলে, সে হঠকারী দুষ্কর্মা, কিন্তু তার পৌরুষ আছে। যে ক্রোধের বশে ধর্মাধর্মের জ্ঞান হারায় না এবং অন্যায়ের যথোচিত প্রতিকার করে, সেই শ্রেষ্ঠ পুরুষ।
ভীম সহাস্যে বললেন, যদুনন্দন, আমি কাপুরুষ অমানষে নই, ধর্মভীরু পুরুষশ্রেষ্ঠও নই, আমি মধ্যম পাণ্ডব, সকল বিষয়েই মধ্যম। আচ্ছা, এখন যাচ্ছি, তুমি বিশ্রাম কর।
১১৮