পাতা:গল্পকল্প - পরশুরাম.pdf/১৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গল্পকল্প

তোলবার জন্য আজ নমিতা যুদ্ধের সাজে দর্শন দিলেন। নাকে নথ, কানে মাকড়ি, গলায় চিক, হাতে অনন্ত আর বালা, কোমরে গোট। কোথা থেকে একটা বাঁকমলও যোগাড় ক’রে পায়ে পরেছেন।

 সিদ্ধিনাথ বললেন, আসুন মিসেস মুখুজ্যে।

 নমিতা। মিসেস আবার কি? আমি ফিরিঙ্গী হয়ে গেছি নাকি? বউদিদি বলতে মুখে বাধল কেন?

 সিদ্ধিনাথ। আর বলা চলবে না, এত দিন ভুল ধারণার বশে বলেছি। আজ সকালে হিসেব ক’রে দেখলুম গোপাল আমার চাইতে আট দিনের ছোট। যদি অনুমতি দেন তো এখন থেকে বউমা বলতে পারি।

 নমিতা। বেশ, তাই না হয় বলবেন।

 সিদ্ধিনাথ। বউমা, একটু সামনে দাঁড়াও তো।

 নমিতা কোমরে হাত দিয়ে বীরাঙ্গনার মতন সগর্বে দাঁড়ালেন। সিদ্ধিনাথ এক মিনিট নিরীক্ষণ ক’রে চোখ বুজলেন। নমিতা বললেন, চোখ ঝলসে গেল নাকি?

 সিদ্ধিনাথ। উঁহ‍ু, আমি এখন ধ্যানস্থ। বিশ হাজার বৎসর পূর্বের ব্যাপার মানসনেত্রে দেখতে পাচ্ছি। মানুষ তখন বন্য, গ‍ুহায় বাস করে, পাথর আর হাড়ের অস্ত্র দিয়ে শিকার করে। জনসংখ্যা খুব কম, গৃহিণী সহজে জোটে না, জবরদস্তি ক’রে ধ’রে আনতে হয়। দেখছি—একটা ষণ্ডা লেংটা পুর‍ুষ, আমাদের গোপালের সঙ্গে একটু আদল আছে, কিন্তু মুখে

১২৬