ব্যাংকের খাতায় তাঁর জমা অঙ্কের পর অঙ্ক বাড়তে থাকে। পরেশ-গৃহিণীর এখন ঐশ্বর্যের সীমা নেই। গহনা প’রে প’রে তাঁর সর্বাঙ্গে বেদনা হয়েছে, সোনার উপর ঘেন্না ধ’রে গেছে, তিনি শুধু দু হাতে শাঁখা এবং গলায় রুদ্রাক্ষ ধারণ করতে লাগলেন।
কিন্তু পরেশবাবুর কার্যকলাপ বেশী দিন চাপা রইল না। বাংলা সরকারের আদেশে পুলিসের লোক পিছনে লাগল। তারা সহজেই বশে এল, কারণ রামরাজ্যের রীতিনীতি এখনও তাদের রপ্ত হয় নি, দশ-বিশ ভরি পেয়েই তারা ঠাণ্ডা হয়ে গেল। বিজ্ঞানীর দল আহার নিদ্রা ত্যাগ ক’রে নানারকম জল্পনা করতে লাগলেন। যদি তাঁরা দু শ বৎসর আগে জন্মাতেন তবে অনায়াসে বুঝে ফেলতেন যে পরেশবাবু পরশ পাথর পেয়েছেন। কিন্তু আধুনিক বিজ্ঞানে পরশ পাথরের স্থান নেই, অগত্যা তাঁরা সিদ্ধান্ত করলেন যে পরেশবাবু কোনও রকমে একটা পরমাণু ভাঙবার যন্ত্র খাড়া করেছেন এবং ভাঙা পরমাণুর টুকরো জুড়ে জুড়ে সোনা তৈরি করছেন, যেমন ছেড়া ঁকাপড় থেকে কাঁথা তৈরি হয়। মুশকিল এই, যে পরেশবাবুকে চিঠি লিখলে উত্তর পাওয়া যায় না, আর প্রিয়তোষটা ইডিয়ট বললেই হয়, নিতান্ত পীড়াপীড়ি করলে বলে, আমি শুধু সোনা গলাই, কোথা থেকে আসে তা জানি না। বিদেশের বিজ্ঞানীরা প্রথমে
৪৮