পাতা:গল্পকল্প - পরশুরাম.pdf/৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পরশ পাথর

পরেশবাবুর ব্যাপার গুজব মনে ক’রে উড়িয়ে দিয়েছিলেন, কিন্তু অবশেষে তাঁরাও চঞ্চল হয়ে উঠলেন।

 বিশেষজ্ঞদের উপদেশে ঘাবড়ে গিয়ে ভারত সরকার স্থির করলেন যে পরেশবাবু ডেঞ্জারস পার্সন, কিন্তু কিছুই করতে পারলেন না, কারণ পরেশবাবু কোনও বেআইনী কাজ করছেন না। তাঁকে গ্রেপতার এবং তাঁর কারখানা ক্লোক করবার জন্য একটা অর্ডিনান্স জারির প্রস্তাবও উঠল, কিন্তু ক্ষমতাশালী দেশী ও বিদেশী লোকদের আপত্তির জন্য তা হ’ল না। ব্রিটেন ফ্রান্স আমেরিকা রাশিয়া প্রভৃতি রাষ্ট্রের ভারতস্থ দূতেরা পরেশবাবুর উপর কড়া সুনজর রাখেন, তাঁকে বার বার ডিনারের নিমন্ত্রণ করেন। পরেশবাবু চুপচাপ খেয়ে যান, মাঝে মাঝে ইয়েস-নো বলেন, কিন্তু তাঁর পেটের কথা কেউ বার করতে পারে না, শ্যাম্পেন খাইয়েও নয়। বাংলা দেশের কয়েক জন কংগ্রেসী নেতা তাঁকে উপদেশ দিয়েছেন —রাষ্ট্রের মঙ্গলের জন্য আপনার রহস্য শুধু আমাদের কজনকে জানিয়ে দিন। কয়েক জন কমিউনিস্ট তাঁকে বলেছেন—খবরদার, কারও কথা শুনবেন না মশায়, যা করছেন করে যান, তাতেই জগতের মঙ্গল হবে।

 আত্মীয় বন্ধু আর খোশামদের দল ক্রমেই বাড়ছে, পরেশবাবু তাঁদের যথাযোগ্য পারিতোষিক দিচ্ছেন, তবু কেউ খুশী হচ্ছে না। শত্রুর দল কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে চুপ ক’রে আছে। ঐশ্বর্যবৃদ্ধি হলেও পরেশবাবু তাঁর চাল বেশী

৪৯