আমিও বাসি।
সতীশ। আঃ হরেন, অত চেঁচাস নে, ভালোবাসার কথা আমি লিখি নি।
হরেন। অ্যাঁ! মিথ্যা কথা বলছ! আমি যে পড়লেম ভয়ে আকার, ভা, ল, বয়ে আকার সয়ে আকার ভালোবাসা। আচ্ছা, মাকে ডাকি, তাঁকে দেখাও।
সতীশ। না না, মাকে ডাকতে হবে না। লক্ষীটি, তুই একটু খেলা করতে যা। আমি এইটে শেষ করি।
হরেন। এটা কী, দাদা। এ যে ফুলের তোড়া। আমি নেব।
সতীশ। ওতে হাত দিস নে, হাত দিস নে, ছিঁড়ে ফেলবি।
হরেন। না, আমি ছিঁড়ে ফেলব না, আমাকে দাও-না।
সতীশ। খোকা, কাল তোকে আমি অনেক তোড়া এনে দেব, এটা থাক্।
হরেন। দাদা, এটা বেশ, আমি এইটেই নেব।
সতীশ। না, এ আর-একজনের জিনিস, আমি তোকে দিতে পারব না।
হরেন। হ্যাঁ, মিথ্যে কথা! আমি তোমাকে লজঞ্জুস আনতে বলেছিলেম, তুমি সেই টাকায় তোড়া কিনে এনেছ—তাই বইকি, আর-একজনের জিনিস বইকি।
সতীশ। হরেন, লক্ষী ভাই, তুই একটুখানি চুপ কর, চিঠিখানা শেষ করে ফেলি। কাল তোকে আমি অনেক লজঞ্জুস কিনে এনে দেব।
হরেন। আচ্ছা, তুমি কী লিখছ আমাকে দেখাও।
সতীশ। আচ্ছা দেখাব, আগে লেখাটা শেষ করি।
হরেন। তবে আমিও লিখি।
স্লেট লইয়া চীৎকারস্বরে
ভয়ে আকার ভা, ল, ভাল, বয়ে আকার বা, সয়ে আকার সা, ভালোবাসা।
সতীশ। চুপ চুপ, অত চীৎকার করিস নে। আঃ, থাম্ থাম্।
হরেন। তবে আমাকে তোড়াটা দাও।
সতীশ। আচ্ছা নে, কিন্তু খবরদার ছিঁড়িস নে—ও কী করলি! যা বারণ করলেম তাই! ফুলটা ছিঁড়ে ফেললি! এমন বদ ছেলেও তো দেখি নি।
তোড়া কাড়িয়া লইয়া চপেটাঘাত করিয়া
লক্ষ্মীছাড়া কোথাকার! যা, এখান থেকে যা বলছি! যা!
হরেনের চীৎকারস্বরে ক্রন্দন, সতীশের সবেগে প্রস্থান
বিধুমুখীর ব্যস্ত হইয়া প্রবেশ
বিধু। সতীশ বুঝি হরেনকে কাঁদিয়েছে, দিদি টের পেলে সর্বনাশ হবে। হরেন, বাপ আমার, কাঁদিস নে, লক্ষী আমার, সোনা আমার।
হরেন। (সরোদনে) দাদা আমাকে মেরেছে।
বিধু। আচ্ছা আচ্ছা, চুপ কর্ চুপ কর্। আমি দাদাকে খুব করে মারব এখন।
হরেন। দাদা ফুলের তোড়া কেড়ে নিয়ে গেল।
বিধু। আচ্ছা, সে আমি তার কাছ থেকে নিয়ে আসছি।
হরেনের ক্রন্দন
এমন ছিচকাঁদুনে ছেলেও তো আমি কখনো দেখি নি। দিদি আদর দিয়ে ছেলেটির মাথা খাচ্ছেন। যখন যেটি চায় তখনি সেটি তাকে দিতে হবে। দেখো-না, একবারে