অপরিমেয় দুঃখ আমার বুকের পাঁজরগুলােকে যেন ঠেলিয়া উঠিতে লাগিল।
দারােগাবাব, বেতের মােড়ায় বসিয়া আরামে গুড়গড়ি টানিতেছিলেন। তাঁহার কন্যাদায়গ্রস্ত আত্মীয় মেসোটি আমার প্রতি লক্ষ করিয়াই সম্প্রতি দেশ হইতে আসিয়াছেন; তিনি মাদুরের উপর বসিয়া গল্প করিতেছিলেন। আমি একদমে ঝড়ের বেগে সেখানে উপস্থিত হইলাম। চীৎকার করিয়া বলিলাম, “আপনারা মানুষ না পিশাচ?” বলিয়া আমার সমস্ত দিনের উপার্জনের টাকা ঝনাৎ করিয়া তাহার সম্মুখে ফেলিয়া দিয়া কহিলাম, “টাকা চান তাে এই নিন, যখন মরিকে সঙ্গে লইয়া যাইবেন; এখন এই লােকটাকে ছুটি দিন, ও কন্যার সৎকার করিয়া আসুক।”
বহ, উৎপীড়িতের অশ্রসেচনে দারােগার সহিত ডাক্তারের যে প্রণয় বাড়িয়া উঠিয়াছিল, তাহা এই ঝড়ে ভূমিসাৎ হইয়া গেল।
অনতিকাল পরে দারােগার পায়ে ধরিয়াছি, তাঁহার মহাশয়তার উল্লেখ করিয়া অনেক স্তুতি এবং নিজের বুদ্ধিভ্রংশ লইয়া অনেক আত্মধিক্কার প্রয়ােগ করিয়াছি, কিন্তু শেষটা ভিটা ছাড়িতে হইল।
ভাদ্র ১৩০৭