প্রতিবেশিনী Bés প্রকাশ করিয়া ফলের গন্ধ এবং পাখির গান দিয়া মমবার পেট ভরাইতে চাহে তাহা হইলে সে কেমন হয় । আমি রাগিয়া কহিলাম, “দেখো নবীন, আর্টিস্ট লোকে বলে, দশ্য হিসাবে পোড়ো বাড়ির একটা সৌন্দৰ্য আছে। কিন্তু বাড়িটাকে কেবল ছবির হিসাবে দেখিলে চলে না, তাহাতে বাস করিতে হয়, অতএব আর্টিস্ট যাহাই বলন, মেরামত আবশ্যক। বৈধব্য লইয়া তুমি তো দরে হইতে দিব্য কবিত্ব করিতে চাও, কিন্তু তাহার মধ্যে একটি আকাঙ্ক্ষাপণে মানবহৃদয় আপনার বিচিত্র বেদনা লইয়া বাস করিতেছে, সেটা সমরণ রাখা কতব্য ।” মনে করিয়াছিলাম, নবীনমাধবকে কোনোমতেই দলে টানিতে পারিব না, সেদিন সেইজন্যই কিছু অতিরিক্ত উস্মার সহিত কথা কহিয়াছিলাম। কিন্তু হঠাৎ দেখিলাম, আমার বস্তৃতা-অবসানে নবীনমাধব একটিমাত্র গভীর দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া আমার সমস্ত কথা মালিয়া লইল ; বাকি আরও অনেক ভালো ভালো কথা বলিবার অবকাশই मिळ ना । সপ্তাহখানেক পরে নবীন আসিয়া কহিল, “তুমি যদি সাহায্য কর আমি একটি বিধবাবিবাহ করিতে প্রস্তুত আছি।” এমনি খুশি হইলাম-নবীনকে বকে টানিয়া কোলাকুলি করিলাম ; কহিলাম ; “যত টাকা লাগে আমি দিব।” তখন নবীন তাহার ইতিহাস বলিল । বুঝিলাম, তাহার প্রিয়তমা কাল্পনিক নহে। কিছুকাল ধরিয়া একটি বিধবা নারীকে সে দরে হইতে ভালোবাসিত, কাহারও কাছে তাহা প্রকাশ করে নাই। যে মাসিক পত্রে নবীনের, ওরফে আমার, কবিতা বাহির হইত সেই পত্রগুলি যথাস্থানে গিয়া পেশছিত। কবিতাগুলি ব্যথ হয় নাই। বিনা সাক্ষাৎকারে চিত্ত-আকর্ষণের এই এক উপায় আমার বন্ধ বাহির করিয়াছিলেন। * কিন্তু নবীন বলেন, তিনি চক্রান্ত করিয়া এই-সকল কৌশল অবলম্বন করেন নাই। এমন-কি, তাঁহার বিশ্বাস ছিল, বিধবা পড়িতে জানেন না। বিধবার ভাইয়ের নামে কাগজগুলি বিনা বাক্ষরে বিনা মল্যে পাঠাইয়া দিতেন। এ কেবল মনকে সাত্বনা দিবার একটা পাগলামিমাত্র। মনে হইত, দেবতার উদ্দেশে পপাঞ্জলি দান করা গেল, তিনি জানন বা না জানন, গ্রহণ করন বা নাই করন। নানা ছতায় বিধবার ভাইয়ের সহিত নবীন ষে বন্ধত্ব করিয়া লইয়াছিলেন, নবীন বলেন, তাহারও মধ্যে কোনো উদ্দেশ্য ছিল না। যাহাকে ভালোবাসা বায় তাহার নিকটবতী আত্মীয়ের সঙ্গ মধর বোধ হয়। অবশেষে ভাইয়ের কঠিন পীড়া উপলক্ষে ভগিনীর সহিত কেমন করিয়া সাক্ষাৎ হয় সে সদেীঘ কথা। কবির সহিত কবিতার অবলম্বিত বিষয়টির প্রত্যক্ষ পরিচয় হইয়া কবিতা সম্বন্ধে অনেক আলোচনা হইয়া গেছে। আলোচনা ষে কেবল ছাপানো কবিতা-কয়টির মধ্যেই বন্ধ ছিল তাহাও নহে। সম্প্রতি আমার সহিত তকে পরাস্ত হইয়া নবীন সেই বিধবার সহিত সাক্ষাৎ করিয়া বিবাহের প্রস্তাব করিয়া বসিয়াছে। প্রথমে কিছুতেই সম্মতি পায় নাই। নবীন তখন আমার মুখের সমস্ত যুক্তিগুলি প্রয়োগ করিয়া এবং তাহার সহিত নিজের
পাতা:গল্পগুচ্ছ (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৪০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।