পাতা:গল্পগুচ্ছ (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

86.8 গল্পগুচ্ছ শ্যালক উমাপতিকে কহিল, “তোমার স্মীকে আমাদের এখানে আনিয়া রাখো-না — সমবয়সি স্মীলোক কেহ কাছে নাই, চারর নিশ্চয়ই ভারি ফাঁকা ঠেকে।” সীসঙ্গের অভাবই চারীর পক্ষে অত্যন্ত শোকাবহ, সম্পাদক এইরুপ বঝিল এবং শ্যালকজায়া মন্দাকিনীকে বাড়িতে আনিয়া সে নিশ্চিত হইল । যে সময়ে স্বামী স্ত্রী প্রেমোন্মেষের প্রথম অর্ণালোকে পরস্পরের কাছে অপরাপ মহিমায় চিরন্তন বলিয়া প্রতিভাত হয়, দাপত্যের সেই বর্ণপ্রভামণ্ডিত প্রত্যুষকাল অচেতন অবস্থায় কখন অতীত হইয়া গেল কেহ জানিতে পারিল না। নতনত্বের বাদ না পাইয়াই উভয়ে উভয়ের কাছে পরাতন পরিচিত অভ্যস্ত হইয়া গেল। লেখাপড়ার দিকে চারুলতার একটা স্বাভাবিক ঝোঁক ছিল বলিয়া তাহার দিনগলা অত্যন্ত বোঝা হইয়া উঠে নাই। সে নিজের চেষ্টায় নানা কৌশলে পড়িবার বন্দোবস্ত করিয়া লইয়াছিল। ভূপতির পিসতুত ভাই অমল থাড ইয়ারে পড়িতেছিল, চারলতা তাহাকে ধরিয়া পড়া করিয়া লইত; এই কমাট কু আদায় করিয়া লইবার জন্য অমলের অনেক আবদার তাহাকে সহ্য করিতে হইত। তাহাকে প্রায়ই হোটেলে খাইবার খোরাকি এবং ইংরাজি সাহিত্যগ্রন্থ কিনিবার খরচা জোগাইতে হইত। অমল মাঝে মাঝে বন্ধাদের নিমন্ত্ৰণ করিয়া খাওয়াইত, সেই যজ্ঞ-সমাধার ভার গরদক্ষিণা স্বরপ চারুলতা নিজে গ্রহণ করিত। ভূপতি চারুলতার প্রতি কোনো দাবি করিত না, কিন্তু সামান্য একটু পড়াইয়া পিসতুত ভাই অমলের দাবির অন্ত ছিল না। তাহা লইয়া চারলতা প্রায় মাঝে মাঝে কৃত্রিম কোপ এবং বিদ্রোহ প্রকাশ করিত; কিন্তু কোনো-একটা লোকের কোনো কাজে আসা এবং সেনহের উপদ্রব সহ্য করা তাহার পক্ষে অত্যাবশ্যক হইয়া উঠিয়াছিল। অন্তঃপরের খাস হাতের বননি কাপোটের জতো পরে আসে, আমার তো সহ্য হয় না— একজোড়া কাপোটের জন্তো চাই, নইলে কোনোমতেই পদমর্যাদা রক্ষা করতে १iाद्भछि मा !” চার । হাঁ, তাই বই-কি। আমি বসে বসে তোমার জন্তো সেলাই করে মরি। দাম দিচ্ছি, বাজার থেকে কিনে আনো গে যাও। অমল বলিল, “সেটি হচ্ছে না।” চার জনতা সেলাই করিতে জানে না, এবং অমলের কাছে সে কথা স্বীকার করিতেও চাহে না। কিন্তু তাহার কাছে কেহ কিছু চায় না, অমল চায়--সংসারে সেই একমাত্র প্রাথীর প্রাথনো রক্ষা না করিয়া সে থাকিতে পারে না। অমল যে সময় কালেজে যাইত সেই সময়ে সে লুকাইয়া বহী যত্নে কাপোটের সেলাই শিখিতে লাগিল। এবং অমল নিজে যখন তাহার জন্তার দরবার সম্পণে ভুলিয়া বসিয়াছে এমন সময় একদিন সন্ধ্যাবেলায় চার তাহাকে নিমন্ত্রণ করিল। গ্রীমের সময় ছাদের উপর আসন করিয়া অমলের আহারের জায়গা করা হইয়াছে। বালি উড়িয়া পড়িবার ভয়ে পিতলের ঢাকনায় থালা ঢাকা রহিয়াছে। অমল কলেজের বেশ পরিত্যাগ করিয়া মাখ ধাইয়া ফিটফাট হইয়া আসিয়া উপস্থিত হইল। অমল আসনে বসিয়া ঢাকা খলিল; দেখিল, থালায় একজোড়া নতন-বাঁধানো পশমের জনতা সাজানো রহিয়াছে। চারলতা উচ্চৈঃস্বরে হাসিয়া উঠিল।