“সংক্ষেপে দাদা বলিলেন, ‘মরিতে।”
“আমি বলিলাম, ‘না, সত্য করিয়া বলো-না।’
“তিনি পূর্বাপেক্ষ কিঞ্চিৎ খোলসা করিয়া বলিলেন, বিবাহ করিতে।
“আমি বলিলাম ‘সত্য নাকি’– বলিয়া অনেক হাসিতে লাগিলাম।
“অল্পে অল্পে শুনিলাম, এই বিবাহে ডাক্তার বারো হাজার টাকা পাইবেন।
“কিন্তু আমার কাছে এ সংবাদ গোপন করিয়া আমাকে অপমান করিবার তাৎপর্য কী। আমি কি তাহার পায়ে ধরিয়া বলিয়াছিলাম যে, এমন কাজ করিলে আমি বুক ফাটিয়া মরিব। পুরুষদের বিশ্বাস করিবার জো নাই। পৃথিবীতে আমি একটিমাত্র পুরুষ দেখিয়াছি এবং এক মুহূর্তে সমস্ত জ্ঞান লাভ করিয়াছি।
“ডাক্তার রোগী দেখিয়া সন্ধ্যার পূর্বে ঘরে আসিলে আমি প্রচুর পরিমাণে হাসিতে হাসিতে বলিলাম, কী ডাক্তার-মহাশয়, আজ নাকি আপনার বিবাহ।”
“আমার প্রফুল্লতা দেখিয়া ডাক্তার যে কেবল অপ্রতিভ হইলেন তাহা নহে, ভারি বিমর্ষ হইয়া গেলেন।
“জিজ্ঞাসা করিলাম, ‘বাজনা-বাদ্য কিছু নাই যে’
“শুনিয়া তিনি ঈষৎ একটু নিশ্বাস ফেলিয়া বলিলেন, ‘বিবাহ ব্যাপারটা কি এতই আনন্দের’
“শুনিয়া আমি হাসিয়া অস্থির হইয়া গেলাম। এমন কথাও তো কখনো শুনি নাই। আমি বলিলাম, সে হইবে না, বাজনা চাই, আলো চাই।”
"দাদাকে এমনি ব্যস্ত করিয়া তুলিলাম যে, দাদা তখনই রীতিমতো উংসবের আয়োজনে প্রবৃত্ত হইলেন।
“আমি কেবলই গল্প করিতে লাগিলাম, বধূ ঘরে আসিলে কী হইবে, কী করিব। জিজ্ঞাসা করিলাম, ‘আচ্ছা ডাক্তার-মহাশয়, তখনো কি আপনি রোগীর নাড়ী টিপিয়া বেড়াইবেন।”
“হি হি হি হি! যদিও মানুষের বিশেষত পুরুষের মনটা দৃষ্টিগোচর নয়, তবু আমি শপথ করিয়া বলিতে পারি, কথাগুলি ডাক্তারের বুকে শেলের মতো বাজিতেছিল।