পাতা:গল্পগুচ্ছ (প্রথম খণ্ড).djvu/২৭৬

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
২৭২
গল্পগুচ্ছ

আছে, সমস্তই স্বপ্নের মতো বোধ হইতেছে। কম্পাউণ্ডের বৃহৎ বটগাছ হইতে একটি কোকিল ডাকিতেছে তাহাদের কোনোরূপ আইন-আদালত নাই।

 চন্দরা জজের কাছে কহিল, “ওগো সাহেব, এক কথা আর বারবার কত বার করিয়া বলিব।”

 জজসাহেব তাহাকে বুঝাইয়া বলিলেন, “তুমি যে অপরাধ স্বীকার করিতেছ তাহার শাস্তি কী জান?”

 চন্দনা কহিল, “না।”

 জজসাহেব কহিলেন, “তাহার শাস্তি ফাঁসি।”

 চন্দরা কহিল, “ওগো, তোমার পায়ে পড়ি, তাই দাও-না, সাহেব। তোমাদের যাহা খুশি করে, আমার তো আর সহ্য হয় না।”

 যখন ছিদামকে আদালতে উপস্থিত করিল চন্দরা মুখ ফিরাইল। জজ কহিলেন, “সাক্ষীর দিকে চাহিয়া বলো, এ তোমার কে হয়।”

 চন্দরা দুই হাতে মুখ ঢাকিয়া কহিল, “ও আমার স্বামী হয়।”

 প্রশ্ন হইল, “ও তোমাকে ভালোবাসে না?”

 উত্তর। উঃ, ভারি ভালোবাসে।

 প্রশ্ন। তুমি উহাকে ভালোবাস না?

 উত্তর। খুব ভালোবাসি।

 ছিদামকে যখন প্রশ্ন হইল ছিদাম কহিল, “আমি খুন করিয়াছি।”

 প্রশ্ন। কেন।

 ছিদাম। ভাত চাহিয়াছিলাম, বড়োবউ ভাত দেয় নাই।”

 দুখিরাম সাক্ষ্য দিতে আসিয়া, মূর্ছিত হইয়া পড়িল। মূর্ছাভঙ্গের পর উত্তর করিল, “সাহেব, খুন আমি করিয়াছি।”

 “কেন।”

 “ভাত চাহিয়াছিলাম, ভাত দেয় নাই।”

 বিস্তর জেরা করিয়া এবং অন্যান্য সাক্ষ্য শুনিয়া জজসাহেব স্পষ্ট বুঝিতে পারিলেন, ঘরের স্ত্রীলোককে ফাঁসির অপমান হইতে বাঁচাইবার অন্য ইহার দুই ভাই অপরাধ স্বীকার করিতেছে। কিন্তু, চন্দরা পুলিস হইতে সেশন