পাতা:গল্পগুচ্ছ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সবণমাগ సిOఏ লাগে না। সকলই অসুবিধা এবং মানহানি-জনক। শয়নের খাটটা মতদেহবহনেরও যোগ্য নয়, যাহার সাত কুলে কেহ নাই এমন একটা অনাথ চামচিকে-শাবকও এই জীর্ণ প্রাচীরে বাস করিতে চাহে না, এবং গহসন্জা দেখিলে ব্রহমচারী পরমহংসের চক্ষেও জল আসে। এ-সকল অত্যুক্তির প্রতিবাদ করা পরষের ন্যায় কাপরাষজাতির পক্ষে অসম্ভব। সুতরাং বৈদ্যনাথ বাহিরের দাওয়ায় বসিয়া বিগণ মনোযোগের সহিত ছড়ি চাঁচিতে প্রবত্ত হইলেন । কিন্তু, মৌনব্রত বিপদের একমাত্র পরিতারণ নহে। এক-একদিন স্বামীর শিল্পকাযে বাধা দিয়া গহিণী তাঁহাকে অন্তঃপরে আহবান করিয়া আনিতেন। অত্যন্ত গভীরভাবে অন্য দিকে চাহিয়া বলিতেন, “গোয়ালার দধে বন্ধ করিয়া দাও।” বৈদ্যনাথ কিয়ৎক্ষণ সতৰধ থাকিয়া নম্নভাবে বলিতেন, “দধটা— বন্ধ করিলে কি চলিবে । ছেলেরা খাইবে কণী ।” গহিণী উত্তর করিতেন, “আমানি।” আবার কোনোদিন ইহার বিপরীত ভাব দেখা যাইত— গাহিণী বৈদ্যনাথকে ডাকিয়। বলিতেন, “আমি জানি না। যা করিতে হয় তুমি করো।” বৈদ্যনাথ শলানমন্খে জিজ্ঞাসা করিতেন, "কী করিতে হইবে।” সত্ৰী বলিতেন, “এ মাসের মতো বাজার করিয়া আনো।” বলিয়া এমন একটা ফদ" দিতেন যাহাতে একটা রাজসয়যজ্ঞ সমারোহের সহিত সম্পন্ন হইতে পারিত। বৈদ্যনাথ যদি সাহসপবেক প্রশ্ন করিতেন, “এত কি আবশ্যক আছে”— উত্তর শুনিতেন, “তবে ছেলেগুলো না খাইতে পাইযা মরকে এবং আমিও যাই, তাহা হইলে তুমি একলা বসিয়া খুব সস্তায় সংসার চালাইতে পারবে।” এইরুপে ক্লমে কমে বৈদ্যনাথ বুঝিতে পারিলেন, ছড়ি চাঁচিয়া আর চলে না। একটা-কিছু উপায় করা চাই। চাকরি করা অথবা ব্যাবসা করা বৈদ্যনাথের পক্ষে দরাশা। অতএব কুবেরের ভাণ্ডারে প্রবেশ করিবার একটা সংক্ষেপ রাস্তা আবিস্কার করা চাই । একদিন রাত্রে বিছানায শাইয়া কাতরভাবে প্রার্থনা করিলেন, “হে মা জগদবে, স্বপেন যদি একটা দুঃসাধ্য রোগের পেটেন্ট ঔষধ বলিয়া দাও, কাগজে তাহার বিজ্ঞাপন লিখিবার ভার আমি লইব ।” সে রাত্রে সবপেন দেখিলেন, তাঁহার সত্ৰী তাঁহার প্রতি অসন্তুষ্ট হইয়া বিধবাবিবাহ করিব বলিয়া একান্ত পণ করিয়া বসিয়াছেন। অথাভাবসত্ত্বে উপষন্তে গহনা কোথায় পাওযা যাইবে বলিয়া বৈদ্যনাথ উক্ত প্রস্তাবে আপত্তি করিতেছেন ; বিধবার গহনা আবশ্যক করে না বলিয়া পত্নী আপত্তি খণ্ডন করিতেছেন। তাহার কী একটা চড়ান্ত জবাব আছে বলিয়া তাঁহার মনে হইতেছে অথচ কিছুতেই মাথায় আসিতেছে না, এমন সময় নিদ্রাভঙ্গ হইয়া দেখিলেন সকাল হইয়াছে; এবং কেন যে তাঁহার দীর বিধবাবিবাহ হইতে পারে না তাহার সদত্তের তৎক্ষণাৎ মনে পড়িয়া গেল এবং সেজন্য বোধ করি কিঞ্চিৎ দুঃখিত হইলেন। 鴨 পরদিন প্রাতঃকৃত্য সমাপন করিয়া একাকী বসিয়া ঘড়ির লখ তৈরি করিতেছেন, এমন সময় এক সন্ন্যাসী জয়ধনি উচ্চারণ করিয়া বারে আগত হইল। সেই মহেতেই