পাতা:গল্পগুচ্ছ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ఏరిఫి গল্পগুচ্ছ রহমত কাবলিওয়ালা সম্বন্ধে তিনি সম্পণে নিঃসংশয় ছিলেন না। তাহার প্রতি বিশেষ দষ্টি রাখিবার জন্য তিনি আমাকে বারবার অনুরোধ করিয়াছিলেন। আমি তাঁহার সন্দেহ হাসিয়া উড়াইয়া দিবার চেষ্টা করিলে তিনি পযায়ক্লমে আমাকে গুটিকতক প্রশ্ন করিলেন, "কখনো কি কাহারও ছেলে চুরি যায় না। কাবলদেশে কি দাসব্যবসায় প্রচলিত নাই। একজন প্রকাণ্ড কাবলির পক্ষে একটি ছোটো ছেলে চুরি করিয়া লইয়া যাওয়া একেবারেই কি অসম্পভব।” আমাকে মানিতে হইল, ব্যাপারটা যে অসম্ভব তাহা নহে কিন্তু অবিশ্বাস্য। বিশ্ববাস করিবার শক্তি সকলের সমান নহে, এইজন্য আমার সীর মনে ভয় রহিয়া গেল। কিন্তু, তাই বলিয়া বিনা দোষে রহমতকে আমাদের বাড়িতে আসিতে নিষেধ করিতে পারিলাম না । প্রতি বৎসর মাঘ মাসের মাঝামাঝি রহমত দেশে চলিয়া যায়। এই সময়টা সমস্ত পাওনার টাকা আদায় করিবার জন্য সে বড়ো ব্যস্ত থাকে। বাড়ি বাড়ি ফিরিতে হয় কিন্তু তব একবার মিনিকে দশন দিয়া যায়। দেখিলে বাস্তবিক মনে হয়, উভয়ের মধ্যে যেন একটা ষড়যন্ত্র চলিতেছে। সকালে যে দিন আসিতে পারে না সে দিন দেখি, সন্ধ্যার সময় আসিয়াছে; অন্ধকারে ঘরের কোণে সেই ঢিলেঢালা-জামা-পায়জামা-পরা, সেই ঝোলাঝলিওয়ালা লবা লোকটাকে দেখিলে বাস্তবিক হঠাৎ মনের ভিতরে একটা আশঙ্কা উপস্থিত হয়। কিন্তু, যখন দেখি মিনি কাবলিওয়ালা, ও কাবলিওয়ালা করিয়া হাসিতে হাসিতে ছটিয়া আসে এবং দই অসমবয়সী বন্ধর মধ্যে পাবাতন সরল পরিহাস চলিতে থাকে, তখন সমস্ত হৃদয় প্রসন্ন হইয়া উঠে । এক দিন সকালে আমার ছোটো ঘরে বসিয়া প্রফেশীট সংশোধন করিতেছি। বিদায় লইবার প্বে আজ দিন-দইতিন হইতে শীতটা খুব কনকনে হইয়া উঠিযাছে, চারি দিকে একেবারে হাঁহীকার পড়িয়া গেছে। জানালা ভেদ করিয়া সকালের রৌদ্রটি টেবিলের নীচে আমার পায়ের উপর আসিয়া পড়িয়াছে, সেই উত্তাপটুকু বেশ মধর বোধ হইতেছে। বেলা বোধ করি আটটা হইবে— মাথায়-গলাবন্ধ-জড়ানো উষাচরগণ প্রাতভ্রমণ সমাধা করিয়া প্রায় সকলে ঘরে ফিরিয়া আসিয়াছে। এমন সময় রাস্তায় ভারি একটা গোল শনা গেল। চাহিয়া দেখি, আমাদের রহমতকে দই পাহারাওযালা বধিয়া লইযা আসিতেছে-- তাহার পশ্চাতে কৌতুহলী ছেলের দল চলিয়াছে। রহমতের গান্তরসের রক্তচিহ্ন এবং একজন পাহারাওয়ালার হাতে রক্তাক্ত ছোরা । আমি বারের বাহিরে গিয়া পাহারাওয়ালাকে দাঁড় করাইলাম, জিজ্ঞাসা করিলাম ব্যাপারটা কণী । কিয়দংশ তাহার কাছে, কিয়দংশ রহমতের কাছে শনিয়া জানিলাম যে, আমাদের প্রতিবেশী একজন লোক রামপুরী চাদরের জন্য রহমতের কাছে কিঞ্চিং ধারিত— মিথ্যাপবেক সেই দেনা সে অস্বীকার করে এবং তাহাই লইয়া বচসা করিতে করিতে রহমত তাহাকে এক ছারি বসাইয়া দিয়াছে। রহমত সেই মিথ্যাবাদীর উদ্দেশে নানারপ অশ্রাব্য গালি দিতেছে, এমন সময়ে কাবলিওয়ালা, ও কাবলিওয়ালা করিয়া ডাকিতে ডাকিতে মিনি ঘর হইতে বাহির झद्देम्रा ठामिठन ।