পাতা:গল্পগুচ্ছ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১88 গল্পগুচ্ছ অন্ধ অনমনশক্তির বারা বালিকার মমবেদনা যেন বঝিতে পারিত, এবং সভার গা ঘোষিয়া আসিয়া অলেপ অপে তাহার বাহতে শিং ঘষিয়া ঘষিয়া তাহাকে নিবাক, ব্যাকুলতার সহিত সাত্বনা দিতে চেষ্টা করিত। ইহারা ছাড়া ছাগল এবং বিড়ালশাবকও ছিল; কিন্তু তাহাদের সহিত সভার এরপে সমকক্ষভাবের মৈত্রী ছিল না, তথাপি তাহারা যথেষ্ট আনুগত্য প্রকাশ করিত। বিড়ালশিশুটি দিনে এবং রাত্রে যখন-তখন সভার গরম কোলটি নিঃসংকোচে অধিকার করিয়া সুখনিদ্রার আয়োজন করিত এবং সভা তাহার গ্রীবা ও পষ্ঠে কোমল অঙ্গলি বলাইয়া দিলে যে তাহার নিদ্রাকষণের বিশেষ সহায়তা হয়, ইঙ্গিতে এরপে অভিপ্রায়ও প্রকাশ করিত। ෆ উন্নত শ্রেণীর জীবের মধ্যে সভার আরও একটি সঙ্গী জটিয়াছিল। কিন্তু তাহার সহিত বালিকার ঠিক কিরাপ সম্পক ছিল তাহা নির্ণয় করা কঠিন, কাবণ, সে ভাষাবিশিষ্ট জীব; সতরাং উভয়ের মধ্যে সমভাষা ছিল না। গোঁসাইদের ছোটো ছেলেটি— তাহার নাম প্রতাপ । লোকটি নিতান্ত অকমণ্য । সে যে কাজকম করিয়া সংসারের উন্নতি করিতে যত্ন করিবে, বহর চেষ্টার পর বাপ মা সে আশা ত্যাগ করিয়াছেন। অকমণ্য লোকের একটা সুবিধা এই যে, আত্মীয় লোকেরা তাহাদের উপরে বিরক্ত হয় বটে, কিন্তু প্রায় তাহারা নিঃসম্পক লোকদের প্রিয়পাত্র হয়—কারণ, কোনো কাযে আবদ্ধ না থাকাতে তাহারা সরকারি সম্পত্তি হইয়া দাঁড়ায়। শহরে যেমন এক-আধটা গহসম্পকহীন সরকারি বাগান থাকা আবশ্যক তেমনি গ্রামে দুই-চারিটা অকমাণ্য সরকারি লোক থাকার বিশেষ প্রযোজন। কাজেকমে আমোদে-অবসরে যেখানে একটা লোক কম পড়ে সেখানেই তাহাদিগকে হাতের কাছে পাওয়া যায় । প্রতাপের প্রধান শখ— ছিপ ফেলিয়া মাছ ধরা । ইহাতে অনেকটা সময় সহজে কাটানো যায়। অপরাহুে নদীতীরে ইহাকে প্রায় এই কাজে নিযুক্ত দেখা যাইত। এবং এই উপলক্ষে সভার সহিত তাহার প্রায় সাক্ষাৎ হইত। যে-কোনো কাজেই নিযন্তে থাক, একটা সঙ্গী পাইলে প্রতাপ থাকে ভালো। মাছ ধরার সময় বাক্যহীন সপ্যাঁই সবাপেক্ষা শ্রেষ্ঠ—এইজন্য প্রতাপ সভার মর্যাদা বুঝিত। এইজন্য, সকলেই সভাকে గాణా శాతాళగా శా శా శా శా గా i সভা তেতুলতলায় বসিয়া থাকিত এবং প্রতাপ অনতিদরে মাটিতে ছিপ ফেলিয়া জলের দিকে চাহিয়া থাকিত। প্রতাপের একটি করিয়া পান বরাদ্দ ছিল, সভা তাহা নিজে সাজিয়া আনিত। এবং বোধ করি অনেকক্ষণ বসিয়া বসিয়া চাহিয়া চাহিয়া ইচ্ছা করিত, প্রতাপের কোনো-একটা বিশেষ সাহায্য করিতে, একটা-কোনো কাজে লাগিতে, কোনোমতে জানাইয়া দিতে যে, এই পথিবীতে সেও একজন কম প্রয়োজনীয় লোক নহে। কিন্তু, কিছই কবিবার ছিল না। তখন সে মনে-মনে বিধাতার কাছে অলৌকিক ক্ষমতা প্রার্থনা করিত—মন্ত্রবলে সহসা এমন একটা আশ্চৰ্য কাণ্ড