পাতা:গল্পগুচ্ছ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গল্পগুচ্ছ పిపిపి একটি ক্ষুদ্র পরাতন গল্প গল্প বলিতে হইবে ? কিন্তু, আর তো পারি না। এখন এই পরিশ্রান্ত অক্ষম ব্যক্তিটিকে ছুটি দিতে হইবে। এ পদ আমাকে কে দিল বলা কঠিন। ক্লমে ক্লমে একে একে তোমরা পাঁচজন আসিয়া আমার চারি দিকে কখন জড়ো হইলে, এবং কেন যে তোমরা আমাকে এত অনুগ্রহ করিলে এবং আমার কাছে এত প্রত্যাশা করিলে, তাহা বলা আমার পক্ষে দুঃসাধ্য। অবশ্যই সে তোমাদের নিজগুণে ; শভোদষ্টক্লমে আমার প্রতি সহসা তোমাদের অনুগ্রহ উদয় হইয়াছিল। এবং যাহাতে সে অনুগ্রহ রক্ষা হয় সাধ্যমত সে চেস্টার ব্যটি হয় নাই । কিন্তু, পাঁচজনের অবান্ত অনিদিষ্ট সম্মতিক্ৰমে যে কাৰ্যভার আমার প্রতি অপিত হইয় পড়িয়াছে আমি তাহার যোগ্য নহি । ক্ষমতা আছে কি না তাহা লইয়া বিনয় বা অহংকার করিতে চাহি না; কিন্তু প্রধান কারণ এই যে বিধাতা আমাকে নিজ'নচর জীবরপেই গঠিত করিয়াছিলেন। খ্যাতি যশ জনতার উপযোগী করিয়া আমার গাত্রে কঠিন চমাবরণ দিয়া দেন নাই; তাঁহার এই বিধান ছিল যে, “যদি তুমি আত্মরক্ষা করিতে চাও তো একট নিরালার মধ্যে বাস করিয়ো।" চিত্তও সেই নিরালা বাসস্থানটুকুর জন্য সবাদাই উৎকণ্ঠিত হইয়া আছে, কিন্তু, পিতামহ অদষ্ট পরিহাস করিয়াই হউক অথবা ভুল বুঝিয়াই হউক, আমাকে একটি বিপুল জনসমাজের মধ্যে উত্তীণ করিয়া এক্ষণে মুখে কাপড় দিয়া হাস্য করিতেছেন ; আমি তাঁহার সেই হাস্যে যোগ দিবার চেষ্টা করিতেছি কিন্তু কিছুতেই কৃতকায হইতে পারিতেছি नां । পলায়ন করাও আমার কতব্য বলিয়া মনে হয় না। সৈন্যদলের মধ্যে এমন অনেক ব্যক্তি আছে যাহারা স্বভাবতই যন্ধের অপেক্ষা শান্তির মধ্যেই অধিকতর ফাতি পাইতে পারিত, কিন্তু যখন সে নিজের এবং পরের ভ্রমক্ৰমে যশেধক্ষেত্রের মাঝখানে আসিয়া দাঁড়াইয়াছে তখন হঠাৎ দল ভাঙিয়া পলায়ন করা তাহাকে শোভা পায় না। অদষ্ট সবিবেচনাপবেক প্রাণীগণকে যথাসাধা কমে নিয়োগ করেন না, কিন্তু তথাপি নিযন্তে কায দঢ় নিষ্ঠার সহিত সম্পন্ন করা মানুষের কতব্য। তোমরা আবশ্যক বোধ করিলে আমার নিকট আসিয়া থাক, এবং সমান দেখাইতেও তনটি কর না। আবশ্যক অতীত হইয়া গেলে সেবকাধমের প্রতি অবজ্ঞা প্রকাশ করিয়া কিছর আত্মগৌরব অনুভব করিবারও চেষ্টা করিয়া থাক। পথিবীতে সাধারণত ইহাই স্বাভাবিক এবং এই কারণেই সাধারণ’-নামক একটি অকৃতজ্ঞ অব্যবস্থিতচিত্ত রাজাকে তাহার অনুচরবগ সম্পণে বিশ্বাস করে না। কিন্তু, অনুগ্রহ নিগ্রহের দিকে তাকাইলে সকল সময় কাজ করা হইয়া উঠে না। নিরপেক্ষ হইয়া কাজ না করিলে কাজের গৌরব আর থাকে না । অতএব যদি কিছু শনিতে ইচ্ছা করিয়া আসিয়া থাক তো কিছয় শনাইব । শ্রান্তি মানিব না এবং উৎসাহেরও প্রত্যাশা করিব না । আজ কিন্তু অতি ক্ষুদ্র এবং পথিবীর অত্যন্ত পরাতন একটি গল্প মনে