পাতা:গল্পগুচ্ছ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

○8や গল্পগুচ্ছ সশীলকে গিয়া মারিত। সশীল ভারি রাগ করিয়া বলিত, “পড়াশুনো করে তোমার এই বন্ধি হচ্ছে ? একরত্তি ছেলে হয়ে বড়োমানুষের গায়ে হাত তোল।” অমনি চারি দিক হইতে লোকজন ছটিয়া আসিয়া, কেহ কিল কেহ চড় কেহ গালি দিতে আরম্ভ করে। তখন সবল একান্তমনে প্রাথনা করিতে লাগিল যে, "আহা, যদি আমি আমার ছেলে সশীলের মতো বড়ো হই এবং স্বাধীন হই, তাহা হইলে বাঁচিয়া যাই।” সশীলও প্রতিদিন জোড়হাত করিয়া বলে, “হে দেবতা, বাপের মতো আমাকে ছোটো করিয়া দাও, মনের সুখে খেলা করিয়া বেড়াই। বাবা যেরকম দন্টামি আরম্ভ করিয়াছেন, উ‘হাকে আর আমি সামলাইতে পারি না, সবাদা ভাবিয়া অস্থির হইলাম।” তখন ইচ্ছাঠাকরন আসিয়া বলিলেন, “কেমন, তোমাদের শখ মিটিয়াছে ?” তাহারা দুইজনেই গড় হইয়া প্রণাম করিয়া কহিলেন, “দোহাই ঠাকরন, মিটিয়াছে। এখন আমরা যে যাহা ছিলাম আমাদিগকে তাহাই করিয়া দাও।” ইচ্ছাঠাকরন বলিলেন, “আচ্ছা, কাল সকালে উঠিয়া তাহাই হইবে।” পরদিন সকালে সবল পাবের মতো বডো হইয়া এবং সুশীল ছেলে হইয়া জাগিয়া উঠিলেন। দুইজনেরই মনে হইল যে, স্বপন হইতে জাগিষাছি। সবল গলা ভার করিয়া বলিলেন, “সুশীল, ব্যাকরণ মুখস্থ করবে না ?” সশীল মাথা চুলকাইতে চুলকাইতে বলিল, “বাবা, আমার বই হারিয়ে গেছে।” আশিবন ১৩o২