পাতা:গল্পগুচ্ছ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8bミ গল্পগুচ্ছ জন্য বিধাও জন্মিল না ? এতদিন ধরিয়া তাহাকে যে আমরা এত যত্ন করিয়া রাখিলাম, আর যেমনি বিদায় লইবার একটুখানি ফাঁক পাইল অমনি কোমর বধিয়া প্রস্তুত হইল, যেন এতদিন সংযোগের অপেক্ষা করিতেছিল। অথচ মুখে কতই মিষ্ট, কতই ভালোবাসা। মানুষকে চিনিবার জো নাই। কে জানিত, ষে লোক এত লিখিতে পারে তাহার হৃদয় কিছমাত্র নাই।” | অবজ্ঞা করিতে অনেক চেষ্টা করিল, কিন্তু পারিল না। ভিতরে ভিতরে নিয়ত একটা বেদনার উদবেগ তপত শলের মতো তাহার অভিমানকে ঠেলিয়া ঠেলিয়া তুলিতে লাগিল, “অমল আজ বাদে কাল চলিয়া যাইবে, তব এ কয়দিন তাহার দেখা নাই। আমাদের মধ্যে যে পরস্পর একটা মনান্তর হইয়াছে সেটা মিটাইয়া লইবার আর অবসরও হইল না।” চার প্রতিক্ষণে মনে করে, অমল আপনি আসিবে—তাহাদের এতদিনকার খেলাধুলা এমন করিয়া ভাঙিবে না, কিন্তু অমল আর আসেই না। অবশেষে যখন যাত্রার দিন অত্যন্ত নিকটবতী হইয়া আসিল তখন চার নিজেই অমলকে ডাকিয়া পাঠাইল । অমল বলিল, “আর-একটা পরে যাচ্ছি।” চার তাহাদের সেই বারান্দার চৌকিটাতে গিয়া বসিল। সকালবেলা হইতে ঘন মেঘ করিয়া গমট হইয়া আছে— চার তাহার খোলা চুল এলো করিয়া মাথায় জড়াইয়া একটা হাতপাখা লইয়া ক্লান্ত দেহে অলপ অলপ বাতাস করিতে লাগিল । অত্যন্ত দেরি হইল। ক্লমে তাহার হাতপাখা আর চলিল না। রাগ দুঃখ অধৈৰ্য তাহার বকের ভিতরে ফটিয়া উঠিল । মনে-মনে বলিল, নাই আসিল অমল, তাতেই বা কী। কিন্তু তব পদশব্দ মাত্রেই তাহার মন বারের দিকে ছটিয়া যাইতে লাগিল । দর গিজায় এগারোটা বাজিয়া গেল। নানান্তে এখনি ভূপতি খাইতে আসিবে। এখনও আধ ঘণ্টা সময় আছে, এখনও অমল যদি আসে। যেমন করিয়া হোক, তাহাদের কয়দিনকার নীরব ঝগড়া আজ মিটাইয়া ফেলিতেই হইবে— অমলকে এমনভাবে বিদায় দেওয়া যাইতে পারে না। এই সমবয়সি দেওর-ভাজের মধ্যে যে চিরন্তন মধবে সম্ববন্ধটকুে আছে– অনেক ভাব, আড়ি অনেক স্নেহের দৌরাত্মা, অনেক বিশ্রধ সখালোচনায় বিজড়িত একটি চিরচ্ছায়াময়, লতাবিতান--অমল সে কি আজ ধুলায় লাটাইয়া দিয়া বহুদিনের জন্য বহন্দরে চলিয়া যাইবে। একট পরিতাপ হইবে না ? তাহার তলে কি শেষ জলও সিঞ্চন করিয়া যাইবে নী—তাহাদের অনেকদিনের দেওয়ভাজ-সবন্ধের শেষ আশ্রজেল! আধঘণ্টা প্রায় অতীত হয়। এলো খোঁপা খলিয়া খানিকটা চুলের গাছ চার দ্রুতবেগে আঙলে জড়াইতে এবং খলিতে লাগিল। অশ্র সম্বরণ করা আর যায় না। চাকর আসিয়া কহিল, “মাঠাকরন, বাবর জন্যে ডাব বের করে দিতে হবে।” চার অচল হইতে ভাঁড়ারের চাবি খলিয়া ঝন করিয়া চাকরের পায়ের কাছে ফেলিয়া দিল—সে আশ্চৰ্য হইয়া চাবি লইয়া চলিয়া গেল। _ శా శా * ** ఉగా శా శా కోH F I যথাসময়ে ভূপতি সহাস্যমথে খাইতে আসিল। চার পাখা-হাতে আহারস্থান