পাতা:গল্পসংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নীল-লোহিতের अॉ४िभ $ » ዓ গিয়েছিল। এমন সময় এমন একটি ঘটনা ঘটল, যার ফলে কেউ আমাকে আর সে স্কুল ছাড়াতে পারলেন না। আমাদের স্কুলে পুরানো ছাত্রী নিত্য ছেড়ে যেত, আর নূতন ছাত্রী নিত্য ভর্তি হত। আমার বয়েস যখন পাঁচ বৎসর, পাঁচ মাস, পাঁচ দিন ; ঠিক সেইদিন একটি নূতন ছাত্রী আমাদের স্কুলে এল, যাকে দেখবামাত্রই আমি তার প্রেমে পড়ে গেলুম। এর মূল ছিল আলঙ্কারিকেরা যাকে বলে পূর্ববাসনা। ( এ কথা শুনে আনিলচন্দ্ৰ আর স্থির থাকতে পারলেন না, নীললোহিতের কথায় বাধা দিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন যে, তোমার মনের নতুন ভাবকে তুমি সেই মুহূর্তেই প্রেম বলে চিনতে পারলে ? নীল-লোহিত বললে, “অবশ্য এ-জাতীয় মনোভাব ত আর বই পড়ে শিখতে হয় না, ঠেকেই শিখতে হয়। প্রেমে পড়া আমার সহজ প্রবৃত্তি। এর পর আমি বছরে অন্তত দুবার করে প্রেমে পড়েছি, কিন্তু সে সবই হচ্ছে আমার সেই আদিপ্রেমের reprint মাত্র। পূর্বের সঙ্গে পরের যHকিছু প্রভেদ, সে শুধু ছোটবড় type-এর। অনেকের বিশ্বাস যে, ছোট ছেলের কোন স্পষ্ট অনুভূতি নেই, আছে শুধু বয়স্ক লোকের। এ ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। আমার বয়েস যখন চু'বৎসর, তখন আমার একটি আত্মীয় মারা যান। সেদিন আমার চােখে পৃথিবীর যে নতুন চেহারা দেখা দিয়েছিল, তার পরে পরিবারে যত বার মৃত্যু ঘটেছে, প্রতিবারেই সেই চেহারা দেখেছি। মরে শুধু একজন লোক, আর সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবী যেন জনশূন্য হয়ে যায়, রোদ খ খ করে, আকাশের আলোর ভিতর একটা বিশ্ৰী ঔদস্যের ভাব আসে, আর চারপাশের লোকজন সব ছায়ার মত ঘুরে বেড়ায়। মৃত্যু ও প্রেম সম্বন্ধে ছেলেবুড়োর কোন অধিকারী-ভেদ নেই। কিন্তু মানুষে মানুষে ঢের প্রভেদ আছে। সকলেই মরে, কিন্তু সকলেই আর প্রেমে পড়ে না। তাই ডাক্তারের কথা যেমন সর্বলোকগ্রাহ, প্রেমিকের কথা তেমনি ডাক্তারি । শাস্ত্রে অগ্রাহ্য।” এই বক্তৃতার পর অনিলচন্দ্র আর রী কাড়লেন না। Հե'