পাতা:গল্পসংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

wer 外溺不变 ছোটলোকী বড়মানুষীর এমন চোখে-আঙ্গুল-দেওয়া চেহারা বিলোতে বড় একটা দেখা যায় না। তিনি দু’কথায় আমার পরিচয় নিয়ে আমাকে তঁর সঙ্গে ডিনার খেতে অনুরোধ করলেন, আমি ভদ্রতার খাতিরে স্বীকৃত হলুম। আমরা খানা-কামরায় ঢুকে সবে টেবিলে বসেছি, এমন সময়ে একটি যুবতী গজেন্দ্রগমনে আমাদের কাছে এসে উপস্থিত হলেন। আমি অবাক হয়ে তঁর দিকে চেয়ে রইলুম, কেননা হাতে-বহরে স্ত্রীজাতির এ-হেন নমুনা সে দেশেও অতি বিরল। মাথায় তিনি সীতে।শের সমান উচু, শুধু বর্ণেসীতেশ যেমন শ্যাম, তিনি তেমনি শ্বেত,-সে। সাদার ভিতরে অন্য কোন রঙের চিহ্নও ছিল না-না গালে, না ঠোঁটে, না চুলে, না ভুরুতে। তার পরণের সাদা কাপড়ের সঙ্গে তার চামড়ার কোন তফাৎ করবার জো ছিল না। এই চুনকাম-করা মূর্তিটির গলায় যে একটি মোটা সোণার শিকলি-হার আর দু’হাতে তদনুরূপ chain-bracelet ছিল, আমার চোখ ঈষৎ ইতস্ততঃ করে তার উপরে গিয়েই বসে পড়ল। মনে হল যেন ব্ৰহ্ম-দেশের কোন রাজ-অন্তঃপুর থেকে একটি শ্বেত হস্তিনী তার স্বর্ণ শূঙ্খল ছিড়ে পালিয়ে এসেছে। আমি এই ব্যাপার দেখে এতটা ভেবড়ে গিয়েছিলুম যে, তার অভ্যর্থনা করবার জন্য দাঁড়িয়ে উঠতে ভুলে গিয়ে, যেমন বসেছিলুম তেমনি বসে রইলুম। কিন্তু বেশিক্ষণ এ ভাবে থাকতে হল না। আমার নবপরিচিত প্রৌঢ় সঙ্গিনীটি চেয়ার ছেড়ে উঠে, সেই রক্তমাংসের মনুমেণ্টের সঙ্গে এই বলে আমার পরিচয় করিয়ে দিলেন “TATT FEJi Miss Hildesheimer-fričț3-?” “সোমনাথ গঙ্গোপাধ্যায়” “মিস্টার গ্যাগো-গ্যাগো-গ্যাগো-” আমার নামের উচ্চারণ ওর চাইতে আর বেশী এগােলে না। আমি শ্ৰীমতীর করমর্দন করে বসে পড়লুম। এক তল “জোলির” উপর হাত পড়লে গা যেমন করে ওঠে, আমার তেমনি করতে লাগল। তারপর ম্যাডাম আমার সঙ্গে কথাবার্তা আরম্ভ করলেন, মিস চুপ করেই রইলেন।