পাতা:গল্পসংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

છેર ३७ेश् করে একেবারে সহস্রারে গিয়ে উপনীত হয়েছিল ! জেগে দেখি ব্যাপার আর কিছুই নয়।--বেহােরারা একটি প্ৰকাণ্ড বটগাছের তলায় সোয়ারি সজোরে নিক্ষেপ করে একদম অদৃশ্য হয়েছে। কারণ জিজ্ঞাসা করাতে সর্দারাজী বললেন, ওরা একটু তামাক খেতে গিয়েছে। যাত্রা করে অবধি, এই প্রথম একটি জায়গা আমার চোখে পড়ল, যা দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়। সে বট একাই একশ’ ; চারিদিকে সারি সারি বোয়া নেমেছে, আর তার উপরে পাতা এত ঘনবিন্যস্ত যে, সূর্যরশ্মি তা ভেদ করে আসতে পারছে না। মনে হল, প্রকৃতি তাপক্লিষ্ট পথশ্রান্ত পথিকদের জন্য একটি হাজার থামের পান্থশালা সস্নেহে স্বহস্তে রচনা করে রেখেছেন । সেখানে ছায়। এত নিবিড় যে, সন্ধ্যে হয়েছে বলে আমার ভুল হল, কিন্তু ঘড়ি খুলে দেখি বেলা তখন সবে একটা । আমি এই অবসরে বহুকষ্টে পান্ধি থেকে নিস্কৃতি লাভ করে হাত পা ছড়িয়ে নেবার চেষ্টা করলুম। দেহটিকে সোজা করে খাড়া করতে প্ৰায় মিনিট পোনোর লাগল; কেননা ইতিমধ্যে আমার সর্বাঙ্গে খিল ধরে এসেছিল, তার উপর আবার কোনও অঙ্গ অসাড় হয়ে গিয়েছিল ; কোনও অঙ্গে ঝিনঝিনি ধরেছিল, কোনও অঙ্গে পক্ষাঘাত, কোনও অঙ্গে ধনুষ্টঙ্কার হয়েছিল। যখন শরীরটি সহজ অবস্থায় ফিরে এল, তখন মনে ভাবলুম গাছটি একবার প্রদক্ষিণ করে আসি। খানিকটে দূর এগিয়ে দেখি, বেহারিাগুলো সব পাড়োজীকে ঘিরে বসে আছে, আর সকলে মিলে একটা মহা-জটিল৷ পাকিয়ে তুলেছে। প্রথমে আমার ভয় হল যে, এরা হয়ত আমার বিরুদ্ধে ধর্মঘট করবার চক্রান্ত করছে ; কেননা সকলে একসঙ্গে মহা-উৎসাহে বক্তৃতা করছিল। কিন্তু তারপরেই বুঝলুম যে, এই বকাঝাঁকি চেঁচামেচির অন্য কারণ আছে। এরা যে বস্তুর ধূমপান করছিল, তা যে তামাক নয়—“বড় তামাক”, তার পরিচয় ব্ৰাণেই পাওয়া গেল। এদের স্মৃতি, এদের আনন্দ, এদের লম্বাঝাম্প দেখে, গঞ্জিকার ত্বরিতানন্দ নামের সার্থকতার প্রত্যক্ষ প্রমাণ পেলুম। এক একজন কন্ধেয় এক এক টান দিচ্ছে, আর “ব্যোম কালী কলকাত্তাওয়ালি” বলে হুঙ্কার ছাড়ছে! গাঁজার কন্ধের গড়ন যে এত সুডৌল, তা আমি পূর্বে