পাতা:গল্পসল্প - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



গল্পসল্প

 তুমি ভাড়া শোধ করে দিয়েছিলে তার পরেই।

 সে কী কথা। আমি যে বাদুড়-বাগানে নিমচাঁদ হালদারের কাছে গিয়ে তার বাড়ি ভাড়া নিয়েছি।

 স্ত্রী বললে, বাদুড়-বাগান, সে আবার কোন্ চুলোয়।

 নীলমণি বললে, রোসো, ভেবে দেখি। সে যে কোন্ গলিতে কোন্ নম্বরে তা তো মনে পড়ছে না। কিন্তু লোকটির সঙ্গে লেখাপড়া হয়ে গেছে দেড় বছরের জন্য ভাড়া নিতে হবে।

 স্ত্রী বললে, বেশ করেছ, এখন দুটাে বাড়ির ভাড়া সামলাবে কে।

 নীলমণি বললে, সেটা তো ভাবনার কথা নয়। আমি ভাবছি, কোন্ নম্বর, কোন্ গলি। আমার নোট-বুকে বাদুড়-বাগানের বাসা লেখা আছে। কিন্তু, মনে পড়ছে না, গলিটার নম্বর লেখা আছে কি না।

 তা, তোমার নোট-বইটা বের করো-না।

 মুশকিল হয়েছে যে, তিন দিন ধরে নোট-বইটা খুঁজে পাচ্ছি না।

 ভাগনে বললে, মামা মনে নেই? সেটা যে তুমি দিদিকে দিয়েছিলে স্কুলের কপি লিখতে।

 তোর দিদি কোথায় গেল।

 তিনি তো গেছেন এলাহাবাদে মেসোমশায়ের বাড়িতে।

 মুশকিলে ফেললি দেখছি। এখন কোথায় খুঁজে পাই, কোন্ গলি, কোন্ নম্বর।

 এমন সময়ে এসে পড়ল নিমচাঁদ হালদারের কেরানি। সে বললে, বাদুড়-বাগানের বাড়ির ভাড়া চাইতে এসেছি।

 কোন্ বাড়ি।

 সেই-যে ১৩ নম্বর শিবু সমাদ্দারের গলি।

১৬