পাতা:গল্পসল্প - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিজ্ঞানী

 বাঁচা গেল, বাঁচা গেল। শুনছ গিন্নি? ১৩ নম্বর শিবু সমাদ্দারের গলি। আর ভাবনা নেই।

 শুনে আমার মাথামুণ্ডু হবে কী।

 একটা ঠিকানা পাওয়া গেল।

 সে তো পাওয়া গেল। এখন দুটো বাড়ির ভাড়া সামলাবে কেমন করে।

 সে কথা পরে হবে। কিন্তু বাড়ির নম্বর ১৩, গলির নাম শিবু সমাদ্দারের গলি।

 কেরানির হাত ধরে বললে, ভায়া, বাঁচালে আমাকে। তোমার নাম কী বলো, আমি নোট-বইয়ে লিখে রাখি। পকেট চাপড়ে বললে, ঐ যা। নোট-বই আছে এলাহাবাদে। মুখস্থ করে রাখব— ১৩ নম্বর, শিবু সমাদ্দারের গলি।

 কুসমি বললে, এই কলম হারানো ব্যাপারটা তো সামান্য কথা। যেদিন ওঁর এক-পাটি চটিজুতো পাওয়া যাচ্ছিল না সেদিন নীলমণিবাবুর ঘরে কী ধুন্ধুমারই বেধে গিয়েছিল। ওঁর স্ত্রী পণ করলেন, তিনি বাপের বাড়ি চলে যাবেন। চাকর-বাকররা এক-জোট হয়ে বললে, যদি এক-পাটি চটিজুতো নিয়ে তাদের সন্দেহ করা হয় তবে তার কাজে ইস্তফা দেবে— তার উপরে সে চটিতে তিন তালি দেওয়া।

 আমি বললুম, খবরটা আমারও কানে এসেছিল; দেখলেম, ব্যাপারটা গুরুতর হয়ে দাঁড়িয়েছে। গেলুম নীলুর বাড়িতে। বললুম, ভায়া, তোমার চটি হারিয়েছে?

 সে বললে, দাদা, হারায় নি, চুরি গিয়েছে, আমি তার প্রমাণ দিতে পারি।

১৭