সন্ধান বলে দাও, যাতে রাজরাজেশ্বরের লেগে যায় ধাঁধা, রাজকর্ম যায় ঘুচে, কেবল আমার মুখের দিকে তাকিয়ে দিনরাত্রি কাটে।
সন্ন্যাসী বললেন, আর-কিছুই চাই না?
রাজকন্যা বললেন, না, আর-কিছুই না।
সন্ন্যাসী বললেন, আচ্ছা, আমি তবে চললেম, সন্ধান মিললে নাহয় আবার দেখা দেব।
রাজা সেখান থেকে গেলেন বঙ্গদেশে। রাজকন্যা শুনলেন সন্ন্যাসীর নাম-ডাক। প্রণাম করে বললেন, বাবা, আমাকে এমন কণ্ঠ দাও, যাতে আমার মুখের কথায় রাজরাজেশ্বরের কান যায় ভরে, মাথা যায় ঘুরে, মন হয় উতলা। আমার ছাড়া আর কারো কথা যেন তাঁর কানে না যায়। আমি যা বলাই তাই বলেন।
সন্ন্যাসী বললেন, সেই মন্ত্র আমি সন্ধান করতে বেরলুম। যদি পাই তবে ফিরে এসে দেখা হবে।
ব’লে তিনি গেলেন চলে।
গেলেন কলিঙ্গে। সেখানে আর-এক হাওয়া অন্দরমহলে। রাজকন্যা মন্ত্রণা করছেন কী ক’রে কাঞ্চী জয় ক’রে তাঁর সেনাপতি সেখানকার মহিষীর মাথা হেঁট করে দিতে পারে, আর কোশলের গুমরও তাঁর সহ্য হয় না। তার রাজলক্ষ্মীকে বাঁদী ক’রে তাঁর পায়ে তেল দিতে লাগিয়ে দেবেন।
সন্ন্যাসীর খবর পেয়ে ডেকে পাঠালেন। বললেন, বাবা, শুনেছি সহস্রঘ্নী অস্ত্র আছে শ্বেতদ্বীপে যার তেজে নগর গ্রাম সমস্ত পুড়ে ছাই হয়ে যায়। আমি যাকে বিয়ে করব, আমি চাই তাঁর পায়ের কাছে বড়ো বড়ো রাজবন্দীর হাতজোড় করে থাকবে, আর রাজার মেয়ের বন্দিনী হয়ে কেউ-বা চামর দোলাবে, কেউ-ব ছত্র ধ’রে থাকবে, আর কেউ-বা আনবে তাঁর পানের বাটা।
সন্ন্যাসী বললেন, আর-কিছু চাই নে তোমার?