পাতা:গল্পস্বল্প.djvu/৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

( ২৪ )

তোমাদের কিসের এত উৎসব? তবে কেন তোমাদের মানসজননীকে রাক্ষসী অনুমান করিয়া তাঁহাকে তাঁহার এ সন্তানের রক্তপাতে প্রসন্ন করিবার প্রয়াসী হইয়াছ? ওগো দুর্ব্বলের বল, অসহায়ের সহায় কে আছ হেথা—যথার্থ মানব কে আছ এখানে, এই দুর্ব্বল অসহায়কে রক্ষা কর—আমার এই ক্ষুদ্র জীবন যাহা তোমাদের কাছে কিছুই নহে কিন্তু আমার নিকট অমূল্য, অসময়ে তাহার শেষ করিও না”। ছাগশিশুর সেই অস্ফুট ভাষা দীননাথ যেন বুঝিতে পারিল। সেই কাতর প্রার্থনা সেই আকুল হৃদয়ের বিলাপ তাহার প্রাণে গিয়া যেন আঘাত করিল। তাহার হৃদয় ফাটিয়া চক্ষে জল আসিতে লাগিল।

 পুরোহিত খড়্গ ছাগের গলায় ছুঁয়াইয়া কামারকে দিলেন। ছাগের গলা হাড়কাটে দেওয়া হইলে কর্ম্মকার সেই ভীষণ খড়্গ উত্তোলিত করিল। তাহার পর দীন আর কিছু দেখিতে পাইল না, তাহার মাথা ঘুরিয়া আসিল, চোখ মুদিয়া সে বসিয়া পড়িল। যখন চক্ষু খুলিয়া আবার দাঁড়াইল—দেখিল তখন আর পাঁঠা সেখানে নাই, বলিদানের স্থান রক্তপ্লাবিত। দেখিয়া সে বুঝিল বলিদান হইয়া গিয়াছে।

(২)

 সেই দিন হইতে দীননাথের গ্রামে থাকা ভার হইয়া উঠিল। ছেলেরা তাহাকে দেখিলেই উপহাস করিতে থাকে। একজন তাহাকে সাড়ি পরাইয়া মেয়ে সাজাইতে চাহে, আর একজন অমনি গম্ভীর ভাবে বলিয়া উঠে—“হাঁ হাঁ এমনো কথা! ইনি আমাদের সিপাই পুরুষ, ইহাঁকে গ্রামের সীমানায় দাঁড় করাইয়া দিলে আর কোন ভাবনাই থাকিবে না,”—আর একজন বলিয়া