পাতা:গল্পাঞ্জলি.djvu/১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

X & গল্পাঞ্জলি লাগিল। ক্রমে আলমারি, টেবিল, ভাল ভাল ল্যাম্প প্রভৃতিও গেল । এইরূপে তৃতীয় বর্ষ শেষ হইল—ঋণ ও তাহার মুদ গোকুলে বাড়িতে লাগিল । চতুর্থ বৎসরের প্রারম্ভে, স্ত্রীর অলঙ্কারগুলির প্রতি নলিনীর দৃষ্টি পড়িল । অসহায়া অবল আপত্তি করিতে গিয়া মার খাইয়া, চোখের জলে মাটী ভিজাইয়া একে একে সবগুলি বাহির করিয়া দিতে লাগিল। এইরূপে পঞ্চবর্ষ পূর্ণ হইল। আজ তুই সপ্তাহকাল নলিনী মদ্যপান করে নাই—ন্ত্রীর মস্তকে হস্ত রাখিয়া দিবা করিয়াছে আর জীবনে কখনও করিবে না । মাসের প্রথমে বাড়ীভাড়ার টাকা আদায় করিয়া মাসের উপযোগী চাউল দাইল প্রভৃতি কিনিয়া রাখিত—তাই গত রাত্রে ও আহার ক্রুটিয়াছে । কিন্তু আজ আর চাউল না আসিলে হাড়ি চড়িবে না । গিজার ঘড়িতে ঠং ঠং করিয়া এগারোটা বাজিল । ঝি—এটি পৈত্রিক আমলের পুরাতন ঝি, তাই আজি ও পালায় নাই—আসিয়া বলিল— “বউমা, কয়লা ধরাব কি ? বাবু ত এখন ও এলেন না ।” হেমাঙ্গিনী বলিল—“ধরা ও গে ততক্ষণ ।” “হঁ্য গা, বাবু এত দেরী করছেন কেন ? আমি ত বাছা ভাল বুঝছিনে। মলঙ্গা কি কলুটোলা জ্বকোশ দশ কোশ নয়—সেই প্রাতঃকালে বেরিয়েছেন, এখনও দেখা নেই । হাতে নগদ টাকা পেয়ে আবার, জগন্নাথ শার দোকানে ঢুকলেন না কি ? তা হলে এখন আর বাড়ী আসছেন না—সেই বার নাম তিনটে--” হেমাঙ্গিনীর মনেও এ আশঙ্কা গোপনে জাগিতেছিল—কিন্তু সে মৌখিক বলিল—“ন না, তা যান নি । তিনি এলে তবে খোকা বেদানার রস খাবে, সে কি তিনি জানেন না ?”