পরদিন সকালে রাজামশাই নিজে গিয়ে সেই বটগাছের পিছনে লুকিয়ে রইলেন। সে দিনও কানাই আর মেনকা হাঁস চরাতে এসেছে। গাছতলা দিয়ে যাবার সময় মেনকা মাদারির সঙ্গে কথা বল্ল, তারপর সে চুল বাঁধ্তে ব’সে বাতাসকে কানাইএর পাগড়ী উড়িয়ে নিতে বল্ল, আর কানাইকে সেই পাগড়ীর পিছু পিছু খুব ছুটোছুটী কর্তে হ’ল। রাজামশাই বটগাছের আড়াল থেকে সব দেখ্লেন।
তারপর বাড়ী এসেই তিনি মেনকাকে ডেকে পাঠালেন। মেনকা আস্তেই তিনি তাকে জিজ্ঞাসা কর্লেন, “মা, তুমি কে, আর কেনই বা বোজ এমনি ক’রে ঘোড়ার মাথার সঙ্গে কথা বল?” মেনকা হাত জোড় করে বল্ল, “রাজামশাই, আমি একজনকে ব’লেছি যে এ সব কথা কোন লোককে বল্ব না।”
রাজা বল্লেন, “আচ্ছা মা, কোন লোককে নাই বল্লে। উঠানে যে পেয়ারা গাছ আছে, ঐ গাছটার কাছে গিয়ে বল।” তখন মেনকা গাছের কাছে গিয়ে বল্তে লাগ্ল, “আমি রাজার মেয়ে, আমার এই কষ্ট। ঝি দুষ্টুমি ক’রে আমার সব কেড়ে নিয়েছে, আর আমাকে দিয়ে এখন ঝির কাজ করাচ্ছে। মা যদি এ সব কথা জান্তে পারেন তবে তিনি কেঁদেই মরে যাবেন। রাজামশাই কিন্তু লুকিয়ে লুকিয়ে এসে সবই শুনেছেন। শুনেই তখনি তিনি তাঁর ছেলেকে ডেকে সব কথা বল্লেন। রাজার ছেলে দেখ্লেন সত্যি সত্যিই সেই ঝিটার চেয়ে মেনকা দেখ্তে অনেক সুন্দর।