মাছকে ডাক্ল, “বোয়াল মাছ, বোয়াল মাছ, জেলেনী আবার কি চায় শোন।”
মাছ বল্ল, “কি চায়?”
জেলে ভয়ে ভয়ে বল্ল, “রাণী হতে চায়।” “তবে রাণীই হবে,” ব’লে মাছ চলে গেল। অমনি জেলের ছোট দালান প্রকাণ্ড বড় রাজার বাড়ী হয়ে গেল। চারিদিকে লোক জন; সিপাই প্রকাণ্ড লোহার দরজার কাছে তলোয়ায় খুলে দাঁড়িয়ে আছে। জেলে যেতেই তাকে সকলে সেলাম করে,“জয় মহারাজ, আসুন মহারাজ” ব’লে ভিতরে নিয়ে গেল। সেখানে মস্ত সভা জমেছে, কত বড় বড় লোক বসে আছে, তাদের সোনালী পোষাক ঝক্ঝক্ করছে, মাঝখানে উচু বেদীতে সোনার সিংহাসনে জেলেনী বসে আছে। তার চার পাশে, নানারঙ্গের পোষাক প’রে সখীরা সব দাঁড়িয়ে আছে। সিংহাসনের উপর সোনার চাঁদোয়াতে মুক্তার ঝালর; আর সভার চারিদিকে কতই রঙ্ বেরঙের রেশমী কাপড়, জরির ঝালর, ঝাড় লণ্ঠন, সব ঝক্ঝক্ কর্ছে। জেলে জেলেনীকে বল্ল “এখন যা চাও তাই হল ত? এর চেয়ে আর কি বেশী হতে পারে।” কিন্তু যার লোভ বেশী সে কিছুতেই সুখী হয় না। যত পায়, আরও তত চায়। রাণী হয়েও জেলেনী খুসী হ’ল না। সে পৃথিবীর রাণী হয়েছে, চাঁদ সূর্য্যের রাণীত হয়ে দেখেনি। এখন সে আকাশের রাণী হতে চায়। সে জেলেকে আবার মাছের কাছে যাবার জন্য ধর্ল। জেলে বল্ল, “দেখ, বেশী বাড়াবাড়ি ভাল না। আমি যাচ্ছি কিন্তু যদি কিছু হয় শেষে আমাকে দোষ দিতে পার্বে না।”