পাতা:গল্প-গ্রন্থাবলী (প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়) তৃতীয় খণ্ড.djvu/১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পোস্ট মাস্টার খড়ে হাওয়া গ্রাম্য পোস্ট আফিসের ভিতরে, নড়বড়ে টেবিলের সামনে, হাত ভাঙ্গা চেয়ারের উপর, বেগনে রঙের আলোয়ান গায়ে ঐ যে যবেকটি বসিয়া কাজ করিতেছে, ওই এখানকার পোস্ট মাস্টার বা ডাকবাব বিমলচন্দ্র গগোপাধ্যায়। ঘড়িতে ঠং ঠং করিয়া দশটা বাজিতেই বাহিরে ঝম বাম শব্দ শনা গেল; রাণার ডাক লইয়া আসিয়াছে। রাণার প্রবেশ করিয়া ডাকের ব্যাগটি টেবিলের উপর রাখিল; বাবকে প্রণাম করিয়া কপালের ঘাম মাছিল। ডাকবাব ব্যাগের শিলমোহর পরীক্ষা করিয়া দেখিলেন। রাণার তখন “তামকে খাইতে বাহিরে চলিয়া গেল। গহ এখন জনশ,ন্য। পিয়নেরা রান্না খাওয়া সারিয়া লইতেছে—খানিক পরেই আসিয়া জটিবে, এবং নিজ নিজ বীটের চিঠি, মনি অর্ডার, রেজিস্টারি প্রভৃতি কঝিয়া লইবে। ব্যাগটি কাটিয়া বিমল উহা টেবিলেব উপর উবড় করিয়া ধরিল। চিঠিপর পাশেল প্রভৃতির সঙ্গে, একটা প্রসিদ্ধ মাসিকপত্রের পাঁচ ছয়টা বিভিন্ন প্যাকেটও বাহির হইল। একটা প্যাকেট লইয়া বিমল তাহার দেরাজের মধ্যে রাখিল। (ইহা সে বাসায় লইয়া যাইবে এবং আহারাদির পর শয়ন করিয়া, খলিয়া গল্প ও প্রেমের কবিতাগুলির রসাসবাদন করিতে করিতে ঘুমাইয়া পড়িবে।) তার পর চিঠির গাদা পরীক্ষা করিতে লাগিল। তাহার মধ্য হইতে ৪৷৫ খানি বাছিয়া লইয়া, দেরজের মধ্যে লুকাইল । এগুলি সমস্তই খামের চিঠি এবং পরেষের হস্তাক্ষরে, সন্ত্রীলোকের নামে ঠিকানা লেখা। এগুলিও সে বাসায় লইয়া গিয়া, জল দিয়া খালিয়া পাঠ করিবে —শধ্যে প্রেমের গল্প কবিতা নয়, প্রেমের চিঠি পড়িতেও বিমল অত্যন্ত ভালবাসে। এটা সে একটা নিদোষ আমোদ বলিয়াই মনে করে; কারণ, চিঠিগুলি সে নষ্ট করে না, আবার জড়িয়া, পরদিন ছাপ মোহর লাগাইয়া, বিলির জন্য পিয়নদের দিয়া থাকে। ছয় মাসের অধিক কাল বিমল এখানে আসিয়াছে—প্রত্যহই এইরুপ চিঠি অপহরণ করে;—এট। তাহার একটা নেশার মত দাঁড়াইয়া গিয়াছে। সাড়ে দশটা বাজিল; পিয়নেরা একে একে আসিয়া টেবিলের উভয় পাশেব বসিয়া গেল। বিমল তাহদের মধ্যে বিভিন্ন গ্রামের পত্রাদি বণ্টন করিয়া দিতে লাগিল; এই অবসরে আমরা এই মহাপরিষের কিঞ্চিৎ পাব পরিচয় দিয়া রাখা উচিত বিবেচনা করি।

  • n দই ॥

বিমলের নিবাস যশোর জেলার কোনও এক গণ্ডয়ামে। তথায় একটি হাইস্কুল অাছে —সেই স্কুলের উপরের ক্লাসগুলির প্রত্যেকটিতে দই তিন বৎসর করিয়া কাটাইয়া বিমল যখন প্রবেশিকা পরীক্ষা দিতে উদ্যত হইল, তখন তাহার গোঁফদাড়ি বেশ পণ্টে হইয়া উঠিয়াছে, এবং বয়স হইয়াছে ২২ বৎসর। গ্রামের লোকে সে সময় বলিয়াছিল “বিমল যে দিন পাস হবে, সেদিন পবের সৃষিা পশ্চিম দিকে উঠবে।" এইরুপ মন্তব্যের যথেষ্ট কারণও বিদ্যমান ছিল। গ্রামের যত বকাটে ছোকরাই ছিল বিমলের বন্ধ; সখের থিয়েটার দলের সেই ছিল প্রধান পাণ্ডা, এবং গঞ্জিকা সেবন ত অনেকদিন হইতেই চলিতেছিল, ইদানীং থিয়ৈটারের রিহাসালে যে বোতলও গোপনে আমদানী হইত, তাহারও বিশ্বাসজনক প্রমাণ আছে। কিন্তু ষে ঘটনা অভাবনীয়, তাহাই ঘটিয়া গেল; গেজেট বাহির হইলে দেখা গেল, বিমল তৃতীয় বিভাগে পাস হইয়াছে—অথচ সন্য দেব গ্রামের লোকের ভবিষ্যৎবাণীর কোনও शाङिग्नई कब्रिटणन ना ।