পাতা:গল্প-গ্রন্থাবলী (প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়) তৃতীয় খণ্ড.djvu/২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

పిw গল্প-গ্রন্থাবলী বিগত শনিবার রায়ে, ২৪ পরগণার অন্তগত মহেশপুর গ্রামের পোস্ট অফিসে একটি ভয়ানক ডাকাতী হইয়া গিয়াছে। পোস্ট মাস্টার বিমলচন্দ্র গঙ্গোপাধ্যায়, স্নাল্লি ১১টার সময় ডাকঘরে বসিয়া হিসাব মিলাইতেছিলেন, পিয়নেরা তৎপর্বেই চলিয়া গিয়াছিল, সেখানে আর কেহ ছিল না। ৫৬ জন যবেক হঠাৎ ডাকঘরের মধ্যে প্রবেশ করিয়া, রিভলবার বাহির করিয়া বলে—“খবন্দর্ণর চীৎকার করিও না, গালি করিব। লোহার সিন্দকের চাবি দাও।” ইহাতে পোস্ট মাস্টার বলেন, “তা কখনই দিব না—প্রাণ দিব তব সরকারের টাকা দিব না।” একজন যবেক তৎক্ষণাৎ পিতলের বাঁট দিয়া বিমলবাবরে মন্তকে সজোরে প্রহার করে। অপর যুবকগণ তাঁহাকে জাপটাইয়া ধরিয়া মাটিতে ফেলিয়া, তাঁহার বকে বসিয়া মুখে কাপড় গজিয়া মুখ বধিবা ফেলে। তারপর হস্তপদাদি রন্জ বারা দঢ়রপে বন্ধ করিয়া চাবি খুজিতে থাকে। চাবি পাইয়া লোহার সিন্দকে খালিয়া পাবদিনের ক্যাশ ৫৪২, লইয়া, সিন্দকে বন্ধ করণান্তর পোস্ট মাস্টারকে বাহিরের বারান্দায় অনিয়া শোয়াইয়া দেয়। অফিস ঘরে তালাবন্ধ করিয়া, চাবির গোছা পোট মাস্টারের পকেটেই ভরিয়া দিয়া তাহারা পলায়ন করে। প্রকাশ, ডাকাতগণের মখে কালো মুখস, গারে কালো কোট, পায়ে বাটজতা ছিল, এবং তাহারা পরপরের মধ্যে কথাবাৰ্ত্তায় মাঝে মাঝে ইংরাজি শব্দ ব্যবহার করিতেছিল। এই ডাকাতি সম্পকে গতকল্য কলিকাতার কয়েকটি ছাত্রাবাসে খানাতল্লাসী হইয়া গিয়াছে এবং পলিস, তিনজন যবেককে সন্দেহ ক্ৰমে গ্রেপ্তার করিয়াছে। শেষ পর্যন্ত ডাকাতেরা কেহই ধরা পড়ে নাই। বিমল আত্মপ্রাণ তুচ্ছ করিয়া সরকারের টাকা রক্ষা করিতে চেন্টা করিয়াছিল, এই বিশ্বাসে সদাশয় গভর্ণমেণ্ট তাহাকে ইনপেক্টর পদে উন্নীত করিয়া দিলেন। রবিবার রাত্রে নবেন যথাস্থানে আসিয়া, বহনক্ষণ অপেক্ষা করিয়া কলিকাতায় ফিরিয়া যায়। বনলতা পত্রে এখানকার সমস্ত ঘটনা জানাইয়াছিল। মাসখানেক পরে, একদিন দিবা বিপ্রহরে, বনলতা পলায়ন করিয়া পদব্রজে রেলের টেশনে গিয়া নরেনের সঙ্গে মিলিত হয় এবং উভয়ে কলিকাতায় চলিয়া যায়। তার বশরে কলিকাতায় গিয়া থানায় এবং উকিল বাড়ীতে অনেক ছটাছটি করিযাছিলেন, কিন্তু কিছই করিতে পারেন নাই। নরেনের সঙ্গে তাহার বিধাহ হইয়া গিয়াছে। যবেকের প্রেম বিবাহের পর তিনটি বৎসরও ঘবিল না—মহেন্দু বিপত্নীক হইল। মাত্র দুই বৎসর নয় মাস পাবে" তাহার বিবাহ হইয়াছিল। মেয়েটির নাম ছিল চঞ্চলা। হিন্দরে মেয়ের চঞ্চলা নাম রাখা ভাল হয় নাই, কারণ, বধ হইয়া তাহাকে পতিকলে খুবতারার মত শুির থাকিতে হইবে। ছেলেবেলায় সে বড় দন্ট ছিল বলিয়াই মা-বাপ তাহার চঞ্চলা নাম রাখিয়াছিলেন; তখন তাঁহারা কি জানিতেন, তাহার জীবন-কুসমটি ভাল করিয়া ফটিতে নী ফুটিতেই, চপলা চঞ্চলার মতই সে আকাশের গায়ে লুকাইবে ? মহেন্দ্র তাহাদের জিলায় অবস্থিত মিশনরী কলেজ হইতে দুইবার বি-এ পরীক্ষা দিয়া, অকৃতকাষ" হইয়া পড়া ছাড়িয়া দিয়াছিল। পড়াশনায় মন তাহার কোন কালেই ছিল না। তাহার মন ছিল খেলায়—তাস পাশা খেলায় নয—ক্রিকেট, ফুটবল, কুন্তী, জিমনাস্টিক ইত্যাদিতে। কলেজের ফুটবল টমের সেই ছিল কাপ্তেন, জিমন্যাটিকের আখড়ায় সেই