পাতা:গল্প-গ্রন্থাবলী (প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়) তৃতীয় খণ্ড.djvu/৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

良也 গলপ-গ্রন্থাবলী সাহেব বলিলেন, “বেশ বৃদ্ধি করিয়াছ। ওগলা তুমিই লিখিয়া রাখ, প্রিয়তমে।” মেমসাহেব একটি একটি করিয়া সমস্ত ব্যঞ্জনবর্ণের উচ্চারণ লিখিতে লাগিলেন। কিন্তু “ত” লইয়া বড় বিপদ হইল। তিনি “ত” কোনমতেই উচ্চারণ করতে পারিলেন না-"ট" উচ্চারণ করতে লাগিলেন। দেখিয়া সাহেব হাসিয়াই আকুল। ü 枣和 讯 লেখাপড়া এই ভাবেই চলিতে লাগিল। সাহেব গহে উপস্থিত থাকিলে, দই দিন ভড়িাইয়া এক দিন পড়েন। যেদিন মহেন্দু আসিবার পবেই প্রস্থান করেন, সে দিন পত্নীকে বলিয়া যান, নতন পড়াটা তুমিই শিখিয়া লইও, কাল সকালে তোমার কাছেই আমি জিজ্ঞাসা করিয়া লইব ।” মেমসাহেব এ দিকে দ্রুতগতি শিখিয়া ফেলিতেছেন। এক মাস হইয়া গেল, সাহেবের “সাধ প্রজাই ভাল করিয়া আয়ত্ত হইল না। কিন্তু মেমসাহেবের প্রথম ভাগ প্রায় শেষ —রাখালের গল্প হইতেছে। তাই কি পরা সময়টা তিনি পড়েন ? দুজনে বসিয়া কত গল্প হয়—কত হাসি তামাসা—কত রঙ্গ-ব্যঙ্গ । একদিন স্বামীর অনুপস্থিতিকালে মেমসাহেব বলিলেন, “আচ্ছা, তোমাদের দেশে, শিক্ষকেরা ছাত্র বা ছাত্রীর গরজেনস্বরপে গণ্য-নয় কি ?” “হ্যাঁ।” “গরজনের সামনে তাঁদের নাম করিতে নাই, তুমি বলিয়াছ। কিন্তু আমি যে তোমার নাম করিয়া ডাকি-মিটার মোহেন বলি, এটা ত উচিত হইতেছে না।” মহেন্দু বলিল, “তাতে আর দোষ কি ? তুমি ত আর বাঙ্গালীর মেয়ে নও।” “অরি, তুমি আমায় মিসেস গ্রীণ বল, সেটাও ভাল শোনায় না। আমার ইচ্ছা, আমি তোমায় গরেজী বলিয়া ডাকিব—আর তুমি আমায় এলসি বলিয়া ডাকিবে। সে কি ভাল হইবে না ?” “তুমি আমায় গরজী বলিয়া ডাকিলে কোনও ক্ষতি হইবে না-কিন্তু আমি তোমায় এলসি বলিয়া ডাকিলে তোমার স্বামী কি সেটা পছন্দ করিবেন ?”—বলিয়া মহেন্দু একট, হাসিল। - মেমসাহেব একটা চিন্তা কবিয়া বলিলেন, “হ্যাঁ,—তা বটে, তিনি হয়ত মনে করিবেন, তোমাতে আমাতে প্রেমে পড়িয়া গিয়াছি। রাগ করিতে পারেন বটে। তবে কাজ নাই— যেমন চলিতেছে, তেমনি চলকে। বড়াকে চটাইয়া লাভ কি ?”—বলিয়া তিনি হাসিতে লাগিলেন। এইরুপ রঙ বেরঙের কথাবাত্তা মাঝে মাঝে হইতে লাগিল। রঙ্গ ক্ৰমে চড়িতে লাগিল। তবে সাহেব উপস্থিত থাকিলে বাজে কথা একটিও হইত না। দই মাস কাটিয়া গিয়াছে সাহেবের প্রথম ভাগ এখনও শেষ হয় নাই, কিন্তু মেমসাহেব বোধোদয় ধরিয়াছেন। এমন সময় সরকারী কায্যে মেজর সাহেবকে করাচী যাইবার আদেশ হইল। দই সপ্তাহকাল সেখানে তাঁহাকে থাকিতে হইবে। সে দিন পড়াইয়া বিদায় গ্রহণ করিবার সময় মহেন্দু বলিল, “তা হলে, আপনি ফিরিয়া আসিলে আবার আমি আসিব ।” মেমসাহেব বলিলেন, “আমি বঝে পড়িব না ? দুই সপ্তাহ না পড়িলে আমি সব ভুলিয়া গুইব যে ”