নাই। অবশেষে ভবভূতির ন্যায় আমার ধারণা হইয়াছিল যে,—
কি জানি জন্মিতে পারে মম সমতুল,
অসীম সময় আছে, বসুধা বিপুল।
কিন্তু বর্ত্তমান কালে এবং ক্ষুদ্র বঙ্গদেশে সেই অসম্ভব দুর্লভ পদার্থ জন্মিয়াছে কি না সন্দেহ।
কন্যাদায়গ্রস্তগণ প্রতিনিয়ত নানা ছলে আমার স্তবস্তুতি এবং বিবিধোপচারে আমার পূজা করিতে লাগিল। কন্যা পছন্দ হউক বা না হউক, এই পূজা আমার মন্দ লাগিল না। ভাল ছেলে বলিয়া, কন্যার পিতৃগণের এই পূজা আমার উচিতপ্রাপ্য স্থির করিয়াছিলাম। শাস্ত্রে পড়া যায়, দেবতা বর দিন্ আর না দিন্, যথাবিধি পূজা না পাইলে বিষম ক্রুদ্ধ হইয়া উঠেন। নিয়মিত পূজা পাইয়া আমারও মনে সেইরূপ অত্যুচ্চ দেবভাব জন্মিয়াছিল।
পূর্ব্বেই বলিয়াছিলাম, ঠাকুর্দ্দা মশায়ের একটি পৌত্রী ছিল। তাহাকে অনেকবার দেখিয়াছি কিন্তু কখনও রূপবতী বলিয়া ভ্রম হয় নাই। সুতরাং তাহাকে বিবাহ করিবার কল্পনাও আমার মনে উদিত হয় নাই। কিন্তু ইহা ঠিক করিয়া রাখিয়াছিলাম যে, কৈলাস বাবু, লোকমারফৎ অথবা স্বয়ং পৌত্রীটিকে অর্ঘ্য দিবার মানসে আমার পূজার বোধন করিতে আসিবেন, কারণ, আমি ভাল ছেলে। কিন্তু তিনি তাহা করিলেন না।