পাতা:গল্প-দশক - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৫৭

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
প্রতিহিংসা।
১৪৯

একটা বিশেষ বিষয়ে বাস্তবিক স্বভাবের মিল দেখা যায়। অম্বিকাচরণ তেমন মিশুক্‌ লোক নহেন। তিনি বাহিরে যান কেবলমাত্র কাজ করিতে। নিজের কাজ সম্পূর্ণ শেষ করিয়া এবং অন্যকে পূরামাত্রায় কাজ করাইয়া লইয়া বাড়ি আসিয়া যেন তিনি অনাত্মীয়তার আক্রমণ হইতে আত্মরক্ষা করিবার জন্য এক দুর্গম দুর্গের মধ্যে প্রবেশ করেন। বাহিরে তিনি এবং তাঁহার কর্তব্য কর্ম্ম, ঘরের মধ্যে তিনি এবং তাঁহার ইন্দ্রাণী—ইহাতেই তাঁহার সমস্ত জীবন পর্যাপ্ত।

 ভূষণের ছটা বিস্তার করিয়া যখন সুসজ্জিতা ইন্দ্রাণী ঘরে প্রবেশ করিলেন, তখন অম্বিকাচরণ তাঁহাকে পরিহাস করিয়া কি একটা কথা বলিবার উপক্রম করিলেন, কিন্তু সহসা ক্ষান্ত হইয়া চিন্তিত ভাবে জিজ্ঞাসা করিলেন—“তোমার কি হয়েচে?”

 ইন্দ্রাণী তাঁহার সমস্ত চিন্তা হাসিয়া উড়াইয়া দিবার চেষ্টা করিয়া কহিলেন, “কি আর হবে? সম্প্রতি আমার স্বামী রত্নের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছে।”

 অম্বিকা খবরের কাগজ ভূমিতলে ফেলিয়া দিয়া কহিলেন—“সে ত আমার অগোচর নেই। তৎপূর্ব্বে?”

 ইন্দ্রাণী একে একে গহনা খুলিতে খুলিতে বলিলেন, “তৎপূর্ব্বে স্বামিনীর কাছ থেকে সমাদর লাভ হয়েচে।”

 অম্বিকা জিজ্ঞাসা করিলেন—“সমাদরটা কি রকমের?”

 ইন্দ্রাণী স্বামীর কাছে আসিয়া তাঁহার কেদারার হাজার