বলি, কিসের শরম এত! সখী, কিসের শরম এত!
সখী, পাতার মাঝারে লুকায়ে মুখানি কিসের শরম এত।
বালা, ঘুমায়ে পড়েছে ধরা। সখী, ঘুমায় চন্দ্রতারা।
প্রিয়ে, ঘুমায় দিক্রবালারা সবে— ঘুমায় জগৎ যত।
বলিতে মনের কথা, সখী, এমন সময় কোথা।
প্রিয়ে, তোলো মুখানি, আছে গো আমার প্রাণের কথা কত।
আমি এমন সুধীর স্বরে, সখী, কহিব তোমার কানে—
প্রিয়ে, স্বপনের মতো সে কথা আসিয়ে পশিবে তোমার প্রাণে।
তবে মুখানি তুলিয়ে চাও, সুধীরে মুখানি তুলিয়ে চাও।
সখী, একটি চুম্বন দাও— গোপনে একটি চুম্বন চাও।
৬
গোলাপ ফুল ফুটিয়ে আছে, মধুপ, হোথা যাস নে—
ফুলের মধু লুটিতে গিয়ে কাঁটার ঘা খাস নে।
হেথায় বেলা, হোথায় চাঁপা শেফালি হোথা ফুটিয়ে—
ওদের কাছে মনের ব্যথা বল্ রে মুখ ফুটিয়ে।
ভ্রমর কহে, ‘হেথায় বেলা হোথায় আছে নলিনী—
ওদের কাছে বলিব নাকো আজিও যাহা বলি নি।
মরমে যাহা গোপন আছে গোলাপে তাহা বলিব—
বলিতে যদি জ্বলিতে হয় কাঁটারই ঘায়ে জ্বলিব।’
৭
পাগলিনী, তোর লাগি কী আমি করিব বল্।
কোথায় রাখিব তোরে খুঁজে না পাই ভূমণ্ডল।
আদরের ধন তুমি, আদরে রাখিব আমি—
আদরিণী, তোর লাগি পেতেছি এ বক্ষস্থল।
আয় তোরে বুকে রাখি– তুমি দেখো, আমি দেখি–
শ্বাসে শ্বাস মিশাইব, আঁখিজলে আঁখিজল।