১৪
খুলে দে তরণী, খুলে দে তোরা, স্রোত বহে যায় যে।
মন্দ মন্দ অঙ্গভঙ্গে নাচিছে তরঙ্গ রঙ্গে— এই বেলা খুলে দে।
ভাঙিয়ে ফেলেছি হাল, বাতাসে পুরেছে পাল,
স্রোতোমুখে প্রাণ মন যাক ভেসে যাক—
যে যাবি আমার সাথে এই বেলা আয় রে।
১৫
এ কী হরষ হেরি কাননে!
পরান আকুল, স্বপন বিকশিত মোহমদিরাময় নয়নে।
ফুলে ফুলে করিছে কোলাকুলি, বনে বনে বহিছে সমীরণ
নবপল্লবে হিল্লোল তুলিয়ে— বসন্তপরশে বন শিহরে।
কী জানি কোথা পরান মন ধাইছে বসন্তসমীরণে।
ফুলেতে শুয়ে জোছনা হাসিতে হাসি মিলাইছে।
মেঘ ঘুমায়ে ঘুমায়ে ভেসে যায় ঘুমভারে অলসা বসুন্ধরা—
দূরে পাপিয়া পিউ-পিউ রবে ডাকিছে সঘনে।
১৬
আমি স্বপনে রয়েছি ভোর, সখী, আমারে জাগায়ো না।
আমার সাধের পাখি যারে নয়নে নয়নে রাখি
তারি স্বপনে রয়েছি ভোর, আমার স্বপন ভাঙায়ো না।
কাল ফুটিবে রবির হাসি, কাল ছুটিবে তিমিররাশি—
কাল আসিবে আমার পাখি, ধীরে বসিবে আমার পাশ।
ধীরে গাহিবে সুখের গান, ধীরে ডাকিবে আমার নাম।
ধীরে বয়ান তুলিয়া নয়ান খুলিয়া হাসিব সুখের হাস।
আমার কপোল ভ’রে শিশির পড়িবে ঝ’রে—
নয়নেতে জল, অধরেতে হাসি, মরমে বহিব ম’রে!
তাহারি স্বপনে আজি মুদিয়া রয়েছি আঁখি—