কখন অসিবে প্রাতে আমার সাধের পাখি,
কখন জাগাবে মোরে আমার নামটি ডাকি।
১৭
গেল গেল নিয়ে গেল এ প্রণয়স্রোতে।
‘যাব না’ ‘যাব না’ করি ভাসায়ে দিলাম তরী—
উপায় না দেখি আর এ তরঙ্গ হতে।
দাঁড়াতে পাই নে স্থান, ফিরিতে না পারে প্রাণ—
বায়ুবেগে চলিয়াছি সাগরের পথে।
জানিনু না, শুনিনু না, কিছু না ভাবিনু—
অন্ধ হয়ে একেবারে তাহে ঝাঁপ দিনু।
এত দূর ভেসে এসে ভ্রম যে বুঝেছি শেষে—
এখন ফিরিতে কেন হয় গো বাসনা।
আগেভাগে, অভাগিনী, কেন ভাবিলি না।
এখন যে দিকে চাই কূলের উদ্দেশ নাই—
সম্মুখে আসিছে রাত্রি, আঁধার করিছে ঘোর।
স্রোতপ্রতিকূলে যেতে বল যে নাই এ চিতে,
শ্রান্ত ক্লান্ত অবসন্ন হয়েছে হৃদয় মোর।
১৮
হাসি কেন নাই ও নয়নে! ভ্রমিতেছ মলিন-আননে।
দেখো, সখী, আঁখি তুলি ফুলগুলি ফুটেছে কাননে।
তোমারে মলিন দেখি ফুলেরা কাঁদিছে সখী
শুধাইছে বনলতা কত কথা আকুল বচনে।
এসো সখী, এসো হেথা, একটি কহো গো কথা—
বলো, সখী, কার লাগি পাইয়াছ মনোব্যথা।
বলো, সখী, মন তোর আছে তোর কাহার স্বপনে