আমার সঙ্গে পঞ্চাশ বার জন্মশোধের আড়ি,
কথায় কথায় নিত্যকালের মতন ছাড়াছাড়ি।
ভাকলে তারে ‘পুঁট্লি’ ব’লে সাড়া দিত মর্জি হলে,
ঝগড়া-দিনের নাম ছিল তার স্বর্ণনলিনী।
৮৫
মনে হল পেরিয়ে এলেম অসীম পথ আসিতে তোমার দ্বারে
মরুতীর হতে সুধাশ্যামল পারে।
পথ হতে গেঁথে এনেছি সিক্তযূথীর মালা,
সকরুণ নিবেদনের গন্ধ ঢালা—
লজ্জা দিয়ো না তারে।
সজল মেঘের ছায়া ঘনায় বনে বনে,
পথহারার বেদন বাজে সমীরণে।
দূরের থেকে দেখেছিলেম বাতায়নের তলে
তোমার প্রদীপ জ্বলে—
আমার আঁখি, ব্যাকুল পাখি ঝড়ের অন্ধকারে।
৮৬
জানি জানি এসেছ এ পথে মনের ভুলে।
তাই তোক তবে তাই হোক— এসো তুমি, দিনু দ্বার খুলে।
এসেছ তুমি যে বিনা আভরণে, মুখর নূপুর বাজে না চরণে—
তাই হোক ওগো, তাই হোক।
মোর আঙিনায় মালতী ঝরিয়া পড়ে যায়—
তব শিথিল কবরীতে নিয়ো নিয়ো তুলে।
কোনো আয়োজন নাই একেবারে, সুর বাঁধা হয় নি যে বীণার তারে-
তাই হোক ওগো, তাই হোক।
ঝরো ঝরো বারি ঝরে বনমাঝে আমারই মনের সুর ওই বাজে—
বেণুশাখা-আন্দোলনে আমারই উতলা মন দুলে।