সে কি মূক বিরহস্মৃতিগুঞ্জরণে তন্দ্রাহারা ঝিল্লিরবে।
সে কি বিচ্ছেদরজনীর যাত্রী বিহঙ্গের পক্ষধ্বনিতে।
সে কি অবগুণ্ঠিত প্রেমের কুণ্ঠিত বেদনায় সম্বৃত দীর্ঘশ্বাসে।
সে কি উদ্ধত অভিমানে উদ্যত উপেক্ষায় গর্বিত মঞ্জীরঝঙ্কারে॥
৯৫
প্রেম এসেছিল নিঃশব্দচরণে।
তাই স্বপ্ন মনে হল তারে
দিই নি তাহারে আসন।
বিদায় নিল যবে, শব্দ পেয়ে গেনু ধেয়ে।
সে তখন স্বপ্ন কায়াবিহীন
নিশীথতিমিরে বিলীন—
দূরপথে দীপশিখা রক্তিম মরীচিকা।
৯৬
নির্জন রাতে নিঃশব্দ চরণপাতে কেন এলে।
দুয়ারে মম স্বপ্নের ধন-সম এ যে দেখি—
তব কণ্ঠের মালা এ কি গেছ ফেলে।
জাগালে না শিয়রে দীপ জ্বেলে—
এলে ধীরে ধীরে নিদ্রার তীরে তীরে,
চামেলির ইঙ্গিত আসে যে বাতাসে লজ্জিত গন্ধ মেলে।
বিদায়ের যাত্রাকালে পুষ্প-ঝরা বকুলের ডালে
দক্ষিণপবনের প্রাণে
রেখে গেলে বল নি যে কথা কানে কানে—
বিরহবারতা অরুণ-আভার আভাসে রাঙায়ে গেলে।