মনের মানুষ লুকিয়ে আসে, দাঁড়ায় পাশে—
হেসে চলে যায় জোয়ার-জলে ভাসিয়ে ভেলা।
দুর্লভধনে দুঃখের পণে লও গো জিনি।
ফাগুন যখন যাবে গো নিয়ে ফুলের ডালা
কী দিয়ে তখন গাঁথিবে তোমার বরণমালা হে গরবিনী।
বাজবে বাঁশি দুরের হাওয়ায়,
চোখের জলে শূন্যে চাওয়ায় কাটবে প্রহর—
বাজবে বুকে বিদায়পথের চরণ ফেলা হে গরবিনী।
তৃতীয়া। সখী, বহে গেল বেলা, শুধু হাসি খেলা
এ কি আর ভালো লাগে।
আকুল তিয়াষ প্রেমের পিয়াস প্রাণে কেন নাহি জাগে।
কবে আর হবে থাকিতে জীবন
আঁখিতে আঁখিতে মদির মিলন—
মধুর হুতাশে মধুর দহন নিতিনব অনুরাগে।
তরল কোমল নয়নের জল নয়নে উঠিবে ভাসি,
সে বিষাদনীরে নিবে যাবে ধীরে প্রখর চপল হাসি।
উদাস নিশ্বাস আকুলি উঠিবে,
আশা-নিরাশায় পরান টুটিবে—
মরমের আলো কপোলে ফুটিবে শরম-অরুণ রাগে।
প্রমদা। ওলো, রেখে দে সখী, রেখে দে— মিছে কথা ভালোবাসা।
সুখের বেদনা, সোহাগযাতনা— বুঝিতে পারি না ভাষা।
ফুলের বাধন, সাধের কাঁদন,
পরান সঁপিতে প্রাণের সাধন,
‘লহো লহো’ ব’লে পরে আরাধন— পরের চরণে আশা।
তিলেক দরশ পরশ মাগিয়া
বরষ বরষ কাতরে জাগিয়া
পরের মুখের হাসির লাগিয়া অসাগরে ভাসা—
জীবনের সুখ খুঁজিবারে গিয়া জীবনের সুখ নাশা।
পাতা:গীতবিতান.djvu/১০৪৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নৃত্যনাট্য মায়ার খেলা
৯১৯