শান্তা ও স্ত্রীগণ। শুভমিলনলগনে বাজুক বাঁশি,
মেঘমুক্ত গগনে জাগুক হাসি।
পুরুষগণ। কত দুখে কত দূরে দূরে আঁধাৱসাগর ঘুরে ঘুরে
সোনার তরী তীরে এল ভাসি।
ওগো পুরবালা, আনো সাজিয়ে বরণডালা।
যুগলমিলনমহৎসবে শুভ শঙ্খরবে
বসন্তের আনন্দ দাও উচ্ছ্বাসি।
প্রমদা। আর নহে, আর নহে।
বসন্তবাতাস কেন আর শুষ্ক ফুলে বহে।
লগ্ন গেল বয়ে, সকল আশা লয়ে—
এ কোন্ প্রদীপ জ্বালো! এ-যে বক্ষ আমার দহে।
আমার কানন মরু হল—
আজ এই সন্ধ্যা-অন্ধকারে সেথায় কী ফুল তোলো।
কাহার ভাগ্য হতে বরণমালা হরণ করো—
ভাঙা ডালি ভরো
মিলনমালার কণ্টকভার কণ্ঠে কি আর সহে।
অমর। ছিন্ন শিকল পায়ে নিয়ে ওরে পাখি,
যা উড়ে, যা উড়ে, যা রে একাকী।
বাজবে তোর পায়ে সেই বন্ধ, পাখাতে পাবি আনন্দ—
দিশাহারা মেঘ যে গেল ডাকি।
নির্মল দুঃখে যে সেই তো মুক্তি নির্মল শূন্যের প্রেমে।
আত্মবিড়ম্বন দারুণ লজ্জা, নিঃশেষে যাক সে থেমে।
দুরাশার মরাবাঁচায় এতদিন ছিলি তোর খাঁচায়—
ধূলিতলে যাবি রাখি।
শান্তা। যাক ছিঁড়ে, যাক ছিঁড়ে যাক মিথ্যার জাল।
দুঃখের প্রসাদে এল আজি মুক্তির কাল।
এই ভালো ওগো, এই ভালো— বিচ্ছেদবহ্নিশিখার আলো।
নিষ্ঠুর সত্য করুক বরদান— ঘুচে যাক ছলনার অন্তরাল।
পাতা:গীতবিতান.djvu/১০৬১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নৃত্যনাট্য মায়ার খেলা
৯৩৩