२०२२ ... . গীতবিতান নহে, গীতই মুখ্য। বাল্মীকিপ্রতিভা ও কালমৃগয়া যেমন গানের স্থত্রে নাট্যের মালা, মায়ার খেলা তেমনি নাট্যের স্বত্রে গানের মালা। ঘটনাস্রোতের পরে তাহার নির্ভর নহে, হৃদয়াবেগই তাহার প্রধান উপকরণ । 尊 —জীবনস্মৃতি। বাল্মীকিপ্রতিভা কবি নিজের সংগীতচর্চা ও সংগীতস্থষ্টি সম্পর্কে বহু কথা ‘জীবনস্মৃতি ও ছেলেবেলা'তে বলিয়াছেন। সংগীত সম্বন্ধে তাহার স্বচিন্তিত অভিমত সঙ্গীতের মুক্তি’ প্রবন্ধে (সবুজপত্র ; ভাত্র ১৩২৪) এবং মাসিক পত্রিকাদিতে ইতস্তত বিক্ষিপ্ত অন্ত প্রবন্ধে ও পত্ররাজিতে, তথা "স্থর ও সঙ্গতি পুস্তকে নিবদ্ধ পত্রালাপেও, অনেকটা জানিতে পারা যাইবে । সংগীত সম্বন্ধে তাহার বহু পুরাতন রচনা হিসাবে ‘সঙ্গীত ও ভাব (ভারতী : জ্যৈষ্ঠ ১২৮৮) উল্লেখ করা যাইতে পারে ; তবে, কবি-যে দীর্ঘ জীবনের সংগীতসাধনার পথে এই প্রবন্ধের ভাবনাধারা কালে পিছনে ফেলিয়া আসিয়াছেন তাহা ‘জীবনস্থতি’র গান সম্বন্ধে প্রবন্ধ অধ্যায়ে স্পষ্ট ভাবেই বলা আছে। রবীন্দ্রনাথের গান-সম্পর্কিত এই-সকল ও অন্যান্য রচনা, চিঠিপত্র, আলাপ, বিশ্বভারতী-কর্তৃক ‘সংগীত-চিন্তা’ গ্রন্থে ( বৈশাখ ১৩৭৩) প্রকাশিত হইয়াছে। এই গ্রন্থে র্তাহার পরিণত অভিমতের এবং তাহার বিকাশেরও একটি পূর্ণ চিত্র পাওয়া যায়। স্বটিতেই স্রষ্টার সব কথা নিঃশেষে নিহিত থাকিলেও, ভাৰ্য-ব্যতীত বুদ্ধি দিয়া তাহা আয়ত্ত করা সকলের পক্ষে সম্ভবপর হয় না ; এবং এ কথা বলিলে অত্যুক্তি হইবে না যে, আজ পর্যন্ত রবীন্দ্রনাথই রবীন্দ্রনাথের শ্রেষ্ঠ ভাষ্যকার। যেমন ‘বাল্মীকিপ্রতিভা প্রভৃতি রচনায় বহু ক্ষেত্রে বিলাতি স্বরের ব্যবহারের কথা ‘জীবনস্মৃতি’ হইতে জানা গেল, ভারতীয় ও যুরোপীয় সংগীতের মধ্যে প্রকৃতিগত পার্থক্য কোথায় জানিতে হইলেও রবীন্দ্রনাথের মন্তব্যই উদ্ধারযোগ্য ( ভারতীয় সংগীত সম্পর্কে রবীন্দ্র-মস্তব্য র্তাহার আপন স্বষ্টি সম্পর্কেও সত্য সন্দেহ নাই )— 弘 যুরোপীয় সংগীতের মর্মস্থানে আমি প্রবেশ করিতে পারিয়াছি, এ কথা বলা আমাকে সাজে না। কিন্তু বাহির হইতে যতটুকু আমার অধিকার হইয়াছিল তাহাতে যুরোপের গান আমার হৃদয়কে এক দিক দিয়া খুবই আকর্ষণ করিত। আমার মনে হইত এ সংগীত রোমাটিক। রোমাটিক
পাতা:গীতবিতান.djvu/১১৫০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।