পাতা:গীতবিতান.djvu/১২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪
পূজা

২১

জাগ’ জাগ’ রে জাগ’ সঙ্গীত—চিত্ত অম্বর কর তরঙ্গিত
নিবিড়নন্দিত প্রেমকম্পিত হৃদয়কুঞ্জবিতানে।
মুক্তবন্ধন সপ্তসুর তব করুক বিশ্ববিহার,
সূর্যশশিনক্ষত্রলোকে করুক হর্ষ প্রচার।
তানে তানে প্রাণে প্রাণে গাঁথ’ নন্দনহার।
পূর্ণ কর’ রে গগন-অঙ্গন তাঁর বন্দনগানে।

২২

হেথা  যে গান গাইতে আসা, আমার  হয় নি সে গান গাওয়া—
আজও কেবলই সুর সাধা, আমার  কেবল গাইতে চাওয়া।
আমার  লাগে নাই সে সুর, আমার  বাঁধে নাই সে কথা,
শুধু  প্রাণেরই মাঝখানে আছে  গানের ব্যাকুলতা।
আজও  ফোটে নাই সে ফুল, শুধু  বহেছে এক হাওয়া।
আমি  দেখি নাই তার মুখ, আমি  শুনি নাই তার বাণী,
কেবল  শুনি ক্ষণে ক্ষণে তাহার  পায়ের ধ্বনিখানি—
আমার দ্বারের সমুখ দিয়ে সে জন  করে আসা-যাওয়া।
শুধু  আসন পাতা হল আমার  সারাটি দিন ধ’রে
ঘরে  হয় নি প্রদীপ জ্বালা,  তারে  ডাকব কেমন করে।
আছি  পাবার আশা নিয়ে, তারে  হয় নি আমার পাওয়া।

২৩

আমি হেথায় থাকি শুধু গাইতে তোমার গান,
দিয়ো তোমার জগৎ-সভায় এইটুকু মোর স্থান।
আমি তোমার ভুবন-মাঝে  লাগি নি, নাথ, কোনো কাজে—
শুধু কেবল সুরে বাজে  অকাজের এই প্রাণ।
নিশায় নীরব দেবালয়ে তোমার আরাধন,
তখন মোরে আদেশ কোরো গাইতে হে রাজন।