পাতা:গীতবিতান.djvu/১২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পূজা
১৫

ভোরে যখন আকাশ জুড়ে  বাজবে বীণা সোনার সুরে
আমি যেন না রই দূরে,  এই দিয়ো মোর মান।

২৪

গানের সুরের আসনখানি পাতি পথের ধারে।
ওগো পথিক, তুমি এসে বসবে বারে বারে।
ঐ যে তোমার ভোরের পাখি  নিত্য করে ডাকাডাকি,
অরুণ-আলোর খেয়ায় যখন এস ঘাটের পারে,
মোর প্রভাতীর গানখানিতে দাঁড়াও আমার দ্বারে।
আজ সকালে মেঘের ছায়া লুটিয়ে পড়ে বনে,
জল ভরেছে ঐ গগনের নীল নয়নের কোণে।
আজকে এলে নতুন বেশে তালের বনে মাঠের শেষে,
অমনি চলে যেয়ো নাকো গোপনসঞ্চারে।
দাঁড়িয়ো আমার মেঘলা গানের বাদল-অন্ধকারে।

২৫

সুর ভুলে যেই ঘুরে বেড়াই কেবল কাজে
বুকে বাজে তোমার চোখের ভর্ৎসনা যে।
উধাও আকাশ উদার ধরা  সুনীল-শ্যামল-সুধায়-ভরা
মিলায় দূরে, পরশ তাদের মেলে না যে—
বুকে বাজে তোমার চোখের ভর্ৎসনা যে।
বিশ্ব যে সেই সুরের পথের হাওয়ায় হাওয়ায়
চিত্ত আমার ব্যাকুল করে আসা-যাওয়ায়।
তোমায় বসাই এ-হেন ঠাই  ভুবনে মোর আর-কোথা নাই,
মিলন হবার আসন হারাই আপন-মাঝে—
বুকে বাজে তোমার চোখের ভর্ৎসনা যে।

২৬

গানের ভিতর দিয়ে যখন দেখি ভুবনখানি
তখন তারে চিনি আমি,  তখন তারে জানি।