পাতা:গীতবিতান.djvu/১২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬
পূজা

তখন তারি আলোর ভাষায় আকাশ ভরে ভালোবাসায়,
তখন তারি ধুলায় ধুলায় জাগে পরম বাণী।
তখন সে যে বাহির ছেড়ে অন্তরে মোর আসে,
তখন আমার হৃদয় কাঁপে তারি ঘাসে ঘাসে।
রূপের রেখা রসের ধারায়  আপন সীমা কোথায় হারায়,
তখন দেখি আমার সাথে সবার কানাকানি।

২৭

খেলার ছলে সাজিয়ে আমার গানের বাণী
দিনে দিনে ভাসাই দিনের তরীখানি।
স্রোতের লীলায় ভেসে ভেসে  সুদূরে কোন্ অচিন দেশে
কোনো ঘাটে ঠেকবে কিনা নাহি জানি।
নাহয় ডুবে গেলই,  নাহয় গেলই বা।
নাহয় তুলে লও গো, নাহয় ফেলোই বা।
হে অজানা, মরি মরি,  উদ্দেশে এই খেলা করি,
এই খেলাতেই আপন-মনে ধন্য মানি।

২৮

যতখন  তুমি আমায় বসিয়ে রাখ বাহির-বাটে
ততখন  গানের পরে গান গেয়ে মোর প্রহর কাটে।
যবে  শুভক্ষণে ডাক পড়ে সেই ভিতর-সভার মাঝে
এ গান  লাগবে বুঝি কাজে
তোমার  সুরের রঙের রঙিন নাটে।
তোমার  ফাগুনদিনের বকুল চাঁপা, শ্রাবণদিনের কেয়া,
তাই দেখে তো শুনি তোমার কেমন যে তান দে’য়া।
আমি  উতল প্রাণে আকাশ-পানে হৃদয়খানি তুলি
বীণায়  বেঁধেছি গানগুলি
তোমার  সাঁঝ-সকালের সুরের ঠাটে।