৪৮
দুঃখের বরষায় চক্ষের জল যেই নামল
বক্ষের দরজায় বন্ধুর রথ সেই থামল।
মিলনের পাত্রটি পূর্ণ যে বিচ্ছেদ -বেদনায়
অর্পিনু হাতে তার, খেদ নাই আর মোর খেদ নাই।
বহুদিনবঞ্চিত অন্তরে সঞ্চিত কী আশা,
চক্ষের নিমেষেই মিটল সে পরশের তিয়াষা।
এত দিনে জানলেম যে কাঁদন কাঁদলেম সে কাহার জন্য।
ধন্য এ জাগরণ, ধন্য এ ক্রন্দন, ধন্য রে ধন্য।
৪৯
সে দিনে আপদ আমার যাবে কেটে
পুলকে হৃদয় যেদিন পড়বে ফেটে।
তখন তোমার গন্ধ তোমার মধু আপনি বাহির হবে বঁধু হে,
তারে আমার ব’লে ছলে বলে কে বলো আর রাখবে এঁটে।
আমারে নিখিল ভুবন দেখছে চেয়ে রাত্রিদিবা।
আমি কি জানি নে তার অর্থ কিবা!
তারা যে জানে আমার চিত্তকোষে অমৃতরূপ আছে বসে গো—
তারেই প্রকাশ করি, আপনি মরি, তবে আমার দুঃখ মেটে।
৫০
আমার হিয়ার মাঝে লুকিয়ে ছিলে দেখতে আমি পাই নি।
তোমায় দেখতে আমি পাই নি।
বাহির-পানে চোখ মেলেছি, আমার হৃদয়-পানে চাই নি।
আমার সকল ভালোবাসায় সকল আঘাত সকল আশায়
তুমি ছিলে আমার কাছে তোমার কাছে যাই নি।
তুমি মোর আনন্দ হয়ে ছিলে আমার খেলায়—
আনন্দে তাই ভুলেছিলেম, কেটেছে দিন হেলায়।
গোপন রহি গভীর প্রাণে আমার দুঃখসুখের গানে