পাতা:গীতবিতান.djvu/১৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৮
পূজা

৫৪

আমারে তুমি অশেষ করেছ,  এমনি লীলা তব—
ফুরায়ে ফেলে আবার ভরেছ,  জীবন নব নব।
কত-যে গিরি কত-যে নদী-তীরে
বেড়ালে বহি ছোটো এ বাঁশিটিরে,
কত-যে তান বাজালে ফিরে ফিরে
কাহারে তাহা কব।
তোমারি ওই অমৃতপরশে  আমার হিয়াখানি
হারালো সীমা বিপুল হরষে,  উথলি উঠে বাণী।
আমার শুধু একটি মুঠি-ভরি
দিতেছ দান দিবস-বিভাবরী—
হল না সারা কত-না যুগ ধরি
কেবলই আমি লব।

৫৫

প্রভু, বলো বলো কবে
তোমার  পথের ধুলার রঙে রঙে আঁচল রঙিন হবে।
তোমার বনের রাঙা ধুলি  ফুটায় পূজার কুসুমগুলি,
সেই ধূলি হায় কখন আমায় আপন করি লবে?
প্রণাম দিতে চরণতলে  ধুলার কাঙাল যাত্রীদলে
চলে যারা, আপন ব’লে চিনবে আমায় সবে।

৫৬

আমার  না-বলা বাণীর ঘন যামিনীর মাঝে
তোমার ভাবনা তারার মতন রাজে।
নিভৃত মনের বনের ছায়াটি ঘিরে
না-দেখা ফুলের গোপন গন্ধ ফিরে,
আমার  লুকায় বেদনা অঝরা অশ্রনীরে—
অশ্রুত বাঁশি হৃদয়গহনে বাজে।