পাতা:গীতবিতান.djvu/১৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পূজা
২৯

ক্ষণে ক্ষণে আমি না জেনে করেছি দান
তোমায় আমার গান।
পরানের সাজি সাজাই খেলার ফুলে,
জানি না কখন নিজে বেছে লও তুলে—
তুমি অলখ আলোকে নীরবে দুয়ার খুলে
প্রাণের পরশ দিয়ে যাও মোর কাজে।

৫৭

আমার  হৃদয় তোমার আপন হাতের দোলে দোলাও,
কে আমারে কী-যে বলে ভোলাও ভোলাও।
ওরা কেবল কথার পাকে নিত্য আমায় বেঁধে রাখে,
বাঁশির ডাকে সকল বাঁধন খোলাও।
মনে পড়ে, কত-না দিন রাতি
আমি ছিলেম তোমার খেলার সাথি।
আজকে তুমি তেমনি ক’রে  সামনে তোমার রাখো ধরে,
আমার প্রাণে খেলার সে ঢেউ তোলাও।

৫৮

ভেঙে মোর ঘরের চাবি নিয়ে যাবি  কে আমারে
 বন্ধু আমার!
না পেয়ে  তোমার দেখা,  একা একা  দিন যে আমার কাটে না রে।
বুঝি গো  রাত পোহালো,
বুঝি ওই  রবির আলো
আভাসে  দেখা দিল গগন-পারে—
সমুখে ওই হেরি পথ,  তোমার কি রথ  পৌঁছবে না মোর দুয়ারে।
আকাশের  যত তারা
চেয়ে বয়  নিমেষহারা,
বসে রয়  রাত-প্রভাতের পথের ধারে।
তোমারি  দেখা পেলে সকল ফেলে ডুববে আলোক-পারাবারে।