পাতা:গীতবিতান.djvu/১৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩২
পূজা

সেইখানেতে সাদায় কালোয়  মিলে গেছে আঁধার আলোয়—
সেইখানেতে ঢেউ ছুটেছে এ পারে ওই পারে।
নিতলনীল নীরব-মাঝে বাজল গভীর বাণী,
নিকষেতে উঠল ফুটে সোনার রেখাখানি।
মুখের পানে তাকাতে যাই,  দেখি-দেখি দেখতে না পাই—
স্বপন-সাথে জড়িয়ে জাগা, কাঁদি অকুল ধারে।

৬৪

আমার  খেলা যখন ছিল তোমার সনে
তখন  কে তুমি তা কে জানত।
তখন  ছিল না ভয়, ছিল না লাজ মনে,
জীবন  বহে যেত অশান্ত।
তুমি ভোরের বেলা ডাক দিয়েছ কত
যেন আমার আপন সখার মতো,
হেসে  তোমার সাথে ফিরেছিলেম ছুটে
সে দিন  কত-না বন-বনান্ত।
ওগো,  সেদিন তুমি গাইতে যে-সব গান
কোনো  অর্থ তাহার কে জানত।
শুধু  সঙ্গে তারি গাইত আমার প্রাণ,
সদা  নাচত হৃদয় অশান্ত।
হঠাৎ  খেলার শেষে আজ কী দেখি ছবি—
স্তব্ধ আকাশ, নীরব শশী রবি,
তোমার  চরণ-পানে নয়ন করি নত
ভুবন  দাঁড়িয়ে আছে একান্ত।

৬৫

সীমার মাঝে, অসীম, তুমি বাজাও আপন সুর—
আমার মধ্যে তোমার প্রকাশ তাই এত মধুর।
কত বর্ণে কত গন্ধে  কত গানে কত ছন্দে